লুকানো চিঠিগুলো
প্রতিদিন চিঠি আসছে।
আমার নক্ষত্র থেকে কমছে একটু একটু করে সৌবর্ণ আলো
মাথা থেকে পায়ের নখে সূর্য নামছে প্রতিদিন।
এখন একাগ্র আরো নিবিষ্ট গাইছে পূরবীর রাগ
ঢাকব না শাদা খামে মেঘেদের চিঠি
নিয়েছি শপথ। এ বিপুল রৌদ্রদিনে আঁধারে কাজ নেই কোনো।
আমি প্রাচীন অশত্থ বট। দেখি কবরের ভেতর এক প্রসন্ন আলো
স্বপ্নের রঙ এতটা স্বপ্রভ! যে তামাশারা খেলেছে প্রতিদিন
নিয়ে দুঃখ বিষাদ আর জ্বেলেছে আগুণ
পাথর পাথর ঘষেছে রাতদিন
আমি ফুল খুঁজি তারে দেবার। যাব অসীমে।
চিঠিগুলো বড় যতনে ভাঁজ করে রাখি নিজেরই শরীরে
সব এলে পরে জানব ভালোবাসা ছিল কত যে গভীর
এই সকালের রঙ এ শালিখের ঠোঁটে লুবনার চোখে নদীটির খেয়াপাড়ে
পেন্সিলের লিরিকে হাতের শাখায়। ফুল দিতে ক্লেশ ছিল যার খুব
তারে আমি দিয়ে গেলাম অখণ্ড অবসর
ঠুকে দিতে শেষ পেরেক কফিনে আমার।
সরণ
নিষ্প্রভ কবিতাগুলো লিখি আজকাল
আর মনে করি দিনগুলো তোমার আমার
তোমার পিঠে লালগোলাপ হয়ে ফুটত যখন
আমার সকাল, তোমার চুম্বনে জ্বলে উঠত
মাধবীনক্ষত্র আমার অমল চুলে। বুকের কপাট খুলে নেমে যাই দীর্ঘ
সিঁড়ি বেয়ে সুরঙ্গ পথে, রাজমহল নাচমহল প্রাচীন কোনো
মৃত নগরীর বুক চিরে জন্ম নেই আবার। উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াই দুজনে
ধান শালিক, উতল বাতাস, বাতাবীলেবু, রাক্ষস রূপকথা।
আসর বসেছিল ছাদের বাতাসে। আকাশে চাঁদের প্রহর, গাইছিলাম
তুমি লিখেছিলে জোছনার ভাষা। সেই থেকে প্রেম অনাদির মতো
দুজনের পাশে পাশে শরতের মেঘ, রাতের কান্না। বীভৎস কোনো
হিংস্র হাড়মাংস ছিঁড়ে খুঁড়ে খেয়ে নিচ্ছিল। শ্বাপদের লালায়
উন্মাদ হয়েছিল প্রেম। আমি আর তুমি তাই প্রথাগত নিয়মেই
আরো নিবিড়, আরো মসৃণ, ঢেউগুলো গুনে যাই আনমনে।
আলিঙ্গনে বেঁধে রাখি নিগুঢ় বিরহব্যথা। উড়ে যাও ফাগুনে
বাতাসে চিঠি লিখো, রাতভর জড়িয়ে রাখি তোমার শরীর
গোপনে জন্ম নেয়া কোমল আত্মজ। ঢেউ ভাঙে বুড়িগঙ্গায়
ব্রক্ষ্মপুত্রেও তার কিছু ছায়া আছে, খঞ্জনপুরে।
পদ্মায়ও কিছুদিন বাস করে শীতল প্রেম।
ছড়ায় নিশিগন্ধ গ্রাম থেকে গ্রামে শরীরে
নদীর অতলে প্রাণভোমরার পাখায়।
উষ্ণ মাধবী রাতে দূর বাতিঘরে চেয়ে আছো
জানো কি বাস করি তারই আলোর গভীরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৬
টিকে/