শীতের দিন
আমাকে টানছে না আর শীতের অরণ্য
ওক ছায়ারা; ঘুমপাহাড়ের নিচে তোমার
মতো হে বিরহী যক্ষ নাকি মেষপালক
আমিও কবে হারিয়ে ফেলেছি রোদ কয়েন!
চতুদ্দিকে মনোটোনাস শীতকাল রিলকে
ট্রামে—ওয়ালে নোটিফিকেশন জুড়ে উড়ছে
শীতের পাতা; কেমন বয়স্ক সব দিন
পার হচ্ছে ঝাড়খন্দ হয়ে নদীয়ার দিকে
ডালিম বিচির মতো একেকটা রাত দেখো
কিভাবে নেমে পড়েছে ম্যারাথন ট্র্যাকে।
মধ্যযাম
এই মধ্যযামে শেষ হয়ে আসে নিকোটিন
খিড়কি তুলে ঢুকে পড়ে ধিম অন্ধকার
গুটিয়ে ফেলে গ্যাবার্ডিন।
মুহ্যমান হাওয়া কাঁপিয়ে যায় শিশুগাছ
বিকেলের কাছে রয়ে গেছে সব প্রাগুক্ত
বাজে ডেভিসের ভায়োলিন।
আমাদের গান শেষ হয়ে এলো; ক্ষীয়মান
আয়ুপথ তবু বেঁকে গেছে মহোৎসবে
টলায়মান বারুণীঘাটে
আমি তার জেনেছি কতটুকু অনন্তর
বিষয়বিভিক্ত জ্ঞানে ঘূর্ণত চক্রবালে
বিগত স্মৃতির মাঠে।
ব্যাধ
শিকারে চলেছে মন পঞ্চবটি বনে
শরীরে বাঘের বল্কল মুখে বৈদিক
ভাষা আমার ব্যাধ হৃদয়—ধনুরাগ
সুতীব্র রোষে দুরন্ত হরিণীর পিছু
নিয়েছে তেজি পা; প্রিয় ভগিনী আমার
এই প্রমত্ত দুপুরে রাম বাণে কাম
তপ্ত দেহে তুমিই আজ ঝলসে যাচ্ছো
সীতা...
আয়ুফল
বিসংজ্ঞ দিন আজ লুটায় ধুলোয়
মিথ মুলা মদে চুরমার চোখ; তবু
আমাদের নিয়ে চলে বয়োজীর্ণ বায়ু
জাহাজ—নেক্রোপোলিস নগরে।
ফারাও আর ফরা অভিমুখে মুখর
বন্দরে কত মাতাল সাধু পেয়ে গেল
বাহু-বন্ধনী; টীকা-টীপ্পনী—ভালগার
জীবনের। দৈনন্দিন খেরোখাতায়
ব্যস্ততা ফুলে ফেঁপে দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে
শার্টের কলার; নড়বড়ে ব্যাকবোন
দুই কাঁধে কত সহজে দুই পা নেড়ে
চলেছে বাদী-বিবাদী দুই টিকেট চেকার।
গুহার ভেতরে আরো গুহা কতদূর
ঘুরে ঘুরে তোলপাড় করা মধুবন
তুমি তা জানো না জয়লতা; প্রতিটি
সন্ধ্যা শেষে কিভাবে বাঁচে ডন জুয়ান।
আমাদের আয়ুফল শেষ হয়ে আসে
দ্বিধাযুক্ত জ্ঞানে যদিও ব্রহ্মবিহার
পেতেছি অমরাবতী তীরে অতঃপর
তক্র ছেড়ে আমারও চাই রিপুর দমন।
প্রত্যেকে একা একা প্রত্যেক বুদ্ধ
নিজেরে আকাশমার্গে করে উৎক্ষিপ্ত।
আমার মতোই হুবহু এক ডামির
হাতে নাম-রূপ-সংজ্ঞার পার্চমেন্ট
হুইসেল শোনার মুহূর্তে ছাড়তে
হবে জেতবন; মৌন স্যানাটোরিয়াম।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৬
টিকে/