ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

৭১ বছরে পদার্পণ সাহিত্যিক গাজী আজিজুর রহমানের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
৭১ বছরে পদার্পণ সাহিত্যিক গাজী আজিজুর রহমানের সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক গাজী আজিজুর রহমান

সাতক্ষীরা: ৭১ বছরে পদার্পণ করেছেন সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক গাজী আজিজুর রহমান। সাহিত্যকর্মের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন দিক এবং নানা স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে তার ৭১তম জন্মদিন উদযাপন করছেন সাতক্ষীরার কবি-সাহিত্যিকরা।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের হোসেন মার্কেট চত্বরে গাজী আজিজুর রহমানের ৭০তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন কমিটি আয়োজন করে ‘দুরন্ত সত্তর’ শীর্ষক আলোচনা সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাহিত্যিক ও নাট্যজন খায়রুল বাসার।

 

আলোচনায় অংশ নেন সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, প্রাবন্ধিক কবির রায়হান, আবৃত্তিকার মনিরুজ্জামান ছট্টু, কবি পল্টু বাসার, প্রাবন্ধিক শুভ্র আহমেদ, কবি স ম তুহিন, বাবলু ভঞ্জ চৌধুরী, কবি গাজী শাহজাহান সিরাজ, মঞ্জুরুল হক, মন্ময় মনির প্রমুখ।  

বক্তারা আজিজুর রহমানের জীবন এবং কর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, প্রতিভার সপ্তপর্ণা মণি ধারণ করে বাংলা সাহিত্যের রস ভাণ্ডার পূর্ণ করে চলেছেন দেশের অন্যতম এই লেখক ও প্রাবন্ধিক। তিনি খুব কম লিখলেও যা লেখেন ভেবেচিন্তে লেখেন। মৃত্যু, আত্মহত্যা এবং কবিতা বিষয়ক তার লেখাগুলো পাঠককে বার বার ভাবিত করে। এছাড়া বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, আধুনিকতা তার লেখালেখির অন্যতম বিষয়। সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে তার দীর্ঘ আড়াই দশকের লেখা পাঠককে জুগিয়েছে নবভাবনার খোরাক।  

অনুষ্ঠানে  ‘দুরন্ত সত্তর’ শীর্ষক একটি স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।  

প্রসঙ্গত, গাজী আজিজুর রহমানের জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতের দার্জিলিংয়ে। তার বাবা কাসেম আলী গাজী এবং মা করিমন্নেসা। তিনি ১৯৬৪ সালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৬৬ সালে সাতক্ষীরা কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৬৯ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। কালীগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন ১৯৭৫ সালে। অধ্যাপক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন ২০১০ সালে। এসময়ে নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করেছেন গবেষণাকর্ম ও সংস্কৃতি সেবায়। কালীগঞ্জে বসে কাজ করলেও তার গবেষণাকর্ম ঢাকা-কোলকাতা পর্যন্ত বিস্তৃত এবং সমাদৃত। পরিশ্রমী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ কয়েকটি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমএর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সাতক্ষীরা সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৫), ম্যান অব দি ইয়ার, বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট (যুক্তরাষ্ট্র, (১৯৯৮), কবি জসীম উদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার (২০০১), শিমুল-পলাশ সাহিত্য পুরস্কার  (কলকাতা, ২০০৪), বাংলা ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র পুরস্কার (২০০৭), লিনট পদক পুরস্কার (২০০৮), সিকানদার আবু জাফর পদক (২০১২) ও কবি সুকান্ত পুরস্কার (কলকাতা, ২০১৫)।

তার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ- প্রবন্ধ গবেষণা: সাহিত্যে সমাজ বাস্তবতার ধারা (১৯৯২, পুনর্মুদ্রণ ২০১৪), স্বেচ্ছামৃত্যুর করতলে কবি (১৯৯৬, পুনর্মুদ্রণ ২০১৫), সাহিত্য ও সিংহাসন (১৯৯৯), নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ (২০০১), সাতক্ষীরার ভাষা ও শব্দকোষ (২০০৪), আধুনিক বাংলা উপন্যাসের বিষয় ও শিল্পরূপ (২০০৯), কবিদের কবি (২০১০) এবং কালীগঞ্জের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ (২০১৪)।  

সম্পাদনা: মরণরে তুহু মম (২০০৪) এবং খান আনসার উদ্দীন আহমেদ রচনাবলী (১৯৯৯)।  

অন্যান্য প্রকাশনা: বজ্রের বাঁশি (উপন্যাস), কালো সূর্যের নীচে (নাটক), সক্রেটিস (নাটক), যোদ্ধার জতুগৃহ (উপন্যাস)।

সম্পাদনার কাজেও তার মুন্সিয়ানা রয়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে সম্পাদনা করে যাচ্ছেন ‘নদী’ নামে একটি সাহিত্যপত্র।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।