দু'পাতা উল্টেই জানতে চাইলেন 'কত দাম'? প্রত্যুত্তরে বিক্রেতা জানালো, ২৬৫ টাকা। হাত থেকে রেখে দিলো বইটি।
একটু ঘুরেফিরেই আবার ওই স্টলে এলো ওই যুবক। স্টলের অন্য বইয়ের উপর ব্যাগ রেখে টাকা বের করে বিক্রেতাকে বললো, বইটি দিন। খুশি মনে ক্রেতাকে বইটি তুলে দিলো বিক্রেতা।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বই মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের বর্ণায়ন স্টলের সামনের দৃশ্য এটি! বইপ্রেমী এ পাঠকের নাম তাহজীব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। এর আগে মেলায় বন্ধুদের সঙ্গে তিনবার এলেও আজকেই বই কিনতে এসেছেন এ সাহিত্যপ্রেমী।
এ পাঠক বলেন, আগে মেলায় এলেও হাতে টাকা না থাকায় কিনতে পারিনি। এখন ৪ হাজার টাকা বই কেনার জন্য এনেছেন। ইতিমধ্যে শেষের পথে। লিস্টে থাকা বইয়ের কিছু বাকি আছে।
তাহজীবের মতো যুবকসহ অসংখ্য বইপ্রেমী মানুষ আজকে শুধু প্রাণের মেলায় বই কিনতেই এসেছেন। এই পাঠকদের অনেকেই কয়েকবার মেলা ঘুরে গেল বই কেনা হয়নি। কেউ কেউ বিভিন্ন স্টল ঘুরে তালিকা সংগ্রহ করেছেন। তালিকা থেকে বই বাছাই করে হাতে টাকা নিয়ে তবেই কিনতে এসেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ফেব্রুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণে এমন ক্রেতা-পাঠকের সংখ্যাই বেশি দেখা গেল। মেলায় আগতদের সবার হাতেই বইয়ের ব্যাগ। কোনো কোনো স্টলে ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খেতেও দেখা গেছে বিক্রেতাদের।
মেলায় এসেছেন ঢাবির আরেক শিক্ষার্থী রুবাইতা। মাস প্রায় শেষ। টিউশনির টাকা পেতেও দেরি। ধার করে বই কিনতে এসেছেন রুবাইতা।
তিনি বলেন, টাকার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বই কেনা হয়ে ওঠেনি। আর সময়ও নেই। তাই বান্ধবীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে এলাম। একটা অভিধান, আহমেদ ছফা সমগ্র, গিফটের জন্য মানিক বন্ধোপাধ্যায়ের উপন্যাস সমগ্র কিনেছি।
হাতে লেখা বইয়ের তালিকা নিয়ে স্টলে স্টলে ঘুরছেন সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ঋতু। বই সংগ্রহ করে তাতে কলম দিয়ে টিক চিহ্ন দিচ্ছেন।
ঋতু বলেন, অনেক বই কিনতে হবে। এতদিন ঘোরাঘুরি হয়েছে এবার শুধু বই কিনতে হবে। গিফট করবো বন্ধুদের আর নিজের জন্যও কিনবো।
পুরো মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে বইপ্রেমী এমন পাঠকের পদচারণা দেখা যায়। তালিকা ধরে বই কিনে স্বস্তির সঙ্গে ব্যাগ ঝুলিয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
এমসি/এসএইচ