সোমবার (১৬ এপ্রিল) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরেও দেখা গেলো তেমনই ‘গ্রামীণ মেলার’ দৃশ্য। বৈশাখ উপলক্ষে একাডেমি প্রাঙ্গণে বসেছে ১০ দিনব্যাপী মেলা।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বেশ বড় আয়োজনে মিষ্টির সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন সুনীল চন্দ্র বিশ্বাস। লাড্ডু, গুড়ের বাতাসা, কয়েক পদের খোরমা, কদমা, খই, মুড়কি, হাতি-ঘোড়ার সাঁচ মিষ্টি, তিলের বাতাসা, মুড়কি, আমেত্রী, দানাদার মিষ্টি, কী নেই তার দোকানে! পাশেই জরিনা বিবি বসিয়েছেন চুড়ির দোকান। মিষ্টির দোকানে যেমন খদ্দের আছে, তেমনি চুড়িতে হাত সাজাতে সময় নষ্ট করছেন না রমনীরা।
ছোট্ট শিশুরা মেতে আছে নাগরদোলায়। মা-বাবার কাছে অনেকের আবার বায়না ধরেছে, ‘আচার খাবো’ অথবা ‘পুতুল কিনে দাও’! কেউ তো আবার পুতুল নাচ দেখার জন্যেও আবদার করেছে বারবার।
মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রওশান আরার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বৈশাখী মেলা সাধারণত গ্রামে হয়। সেখানে যতো আয়োজন, তার অনেকটাই শহরে দেখা দেখা যায় না। তবে বাংলা একাডেমির মেলাটা যেনো একটু অন্যরকম। গ্রামীণ মেলার বেশ বড় একটা আবহ আছে এতে।
বটতলায় বায়োস্কোপে চোখ লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধ আর সুন্দরবনের গল্প দেখছিলেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আহাদ আকন্দ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামের অনেক মেলায় গিয়েও আমি বায়োস্কোপের দেখা পাইনি। তবে এ মেলা বায়োস্কোপ আর পুতুলনাচ দু’টোই তুলে এনেছে শহরের কর্মব্যস্ত মানুষদের জন্য। এটা অবশ্যই আনন্দের বিষয়।
আয়োজকরা জানান, এবারের মেলায় প্রায় ২০০টি স্টলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হস্ত, কুটির ও কারুশিল্পীরা তাদের উৎপাদিত নানাবিধ পণ্যসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এর মাঝে ১০টি স্টলে কারুশিল্পীরা তাদের বিভিন্ন পণ্য তৈরির কাজ প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন। এর মধ্যে মাটির সিকা, নকশি পাখা, নকশি কাঁথা, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী, কাঠের হস্তশিল্প, মাটির তৈজসপত্র উল্লেখযোগ্য। আছে হরেক রকম পোশাকের সমাহার।
মেলা শেষ হবে আগামী ২৩ এপ্রিল। চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। প্রতি সন্ধ্যায় মেলা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
এইচএমএস/কেজেড/