ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাইকে উজ্জীবিত করবে ‘লালজমিন’

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৮
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাইকে উজ্জীবিত করবে ‘লালজমিন’ অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চৌদ্দ বছর ছুঁই ছুঁই এক কিশোরীর গল্প। তার দু'চোখ জুড়ে মানিক বিলের লাল পদ্মের জন্য প্রেম। তার কৈশরেই সে শোনে বাবা মায়ের মধ্য রাতের গুঞ্জন। শুধু দুটি শব্দ কিশোরীর মস্তকে আর মনে জেগে রয়; তা হলো- মুক্তির স্বাধীনতা।

ওই অল্প বয়সেই কিশোরী এক ছায়ার কাছ থেকে প্রেম পায়। বাবা যুদ্ধে চলে যায়।

অগোচরে কিশোরী নানা কৌশলে যুদ্ধে যাবার আয়োজন করে, সশস্ত্র যুদ্ধ। বয়স তাকে অনুমোদন দেয় না।

এবার কিশোরীর সেই ছায়া-প্রেম সম্মুখে দাঁড়ায়। কিশোরী তার সেনাপতিকে চিনতে পারে। তারপর যুদ্ধযাত্রা। লক্ষে পৌঁছুবার আগেই পুরুষ যোদ্ধারা শহীদ হন, কেউ নদীর জলে হারিয়ে যান। পাঁচ যুবতীসহ যুদ্ধযাত্রী এ কিশোরীর জীবনে ঘটে নানা অভিজ্ঞতা।

চৌদ্দ বছরের কিশোরীর ধবধবে সাদা জমিন যুদ্ধকালীন নয় মাসে রক্তরাঙা হয়ে উঠে। আর লাল জমিন কিশোরীর রক্তরাঙা অভিজ্ঞতার মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্যপ্রকাশ 'লালজমিন'।

মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মোমেনা চৌধুরীর একক এ নাটকটি শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের প্রথম প্রযোজিত নাটক। ইতোমধ্যেই নাটকটি পার করেছে তার ১৫০তম প্রদর্শনী। আর এবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের চার দিনব্যাপী নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হলো নাটকটি।

শুক্রবার (১১ মে) সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ এ নাটকটি নিয়ে কথা হয় নাটকটির অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ভুলে গেলে চলবে না। সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। এ নাটকটির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নারীদের অবস্থান বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

নির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, আমার নির্দেশিত নাটকটির ইতোমধ্যে ১৫০তম মঞ্চায়ন শেষ হয়েছে। এটা আমার জন্য বেশ আনন্দের। ২০১১ সালের ১৯ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডলে লালজমিন নাটকটি প্রথম প্রদর্শিত হয়। সে থেকেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও বিদেশের মাটিতে নাটকটির নিয়মিত প্রদর্শনী হয়ে আসছে।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত এ নাটকটি রচনা করেছেন মান্নান হীরা, নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। আর এ নাটকেই দর্শকদের আবেগ তাড়িত করেন একক নাট্য অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী।

সন্ধ্যায় নাটক শেষে দর্শক হাবিবুর রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধোত্তর ইতিহাসের উপর রচিত লালজমিন সামাজিকভাবে দেশপ্রেমে
সবাইকে উদ্বুদ্ধ করবে। এ নাটকটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলেও এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ১১ থেকে ১৪ মে আয়োজন করেছে চার দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। এ পরিবেশনায় প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে পরিবেশিত হবে একটি করে নাটক। আগামীকাল ১২ মে সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হবে নাটক 'লেটার টু এ  চাইল্ড নেভার বর্ণ'। ওরিয়ানা ফাল্লাচি'র গল্প অবলম্বনে নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন শাহেদ ইকবাল, নির্দেশনা করেছেন বাকার বকুল। নাটকটি প্রযোজনা করেছে বুয়েট ড্রামা সার্কেল।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৮
এইচএমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।