ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে বাংলা একাডেমির একক বক্তৃতানুষ্ঠান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৯
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে বাংলা একাডেমির একক বক্তৃতানুষ্ঠান বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে বাংলা একাডেমির একক বক্তৃতানুষ্ঠানে বক্তারা

ঢাকা: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চারণ করেছিলেন এক অমিয় বাণী, রাজনীতির কবিতা। যা আজ বিশ্বজুড়ে ঐতিহাসিক ভাষণের মর্যাদা পেয়েছে। সে ভাষণের দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হলো একক বক্তৃতানুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ৭ই মার্চ ১৯৭১ থেকে ৭ই মার্চ ২০১৯- এই পরিক্রমায় বাঙালি জাতিসত্তা, ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতি যে পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে তার মূলে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য ঐতিহাসিক অবদান। অনন্তকাল ধরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ভাষণ বাংলার মানুষের সার্বিক মুক্তির সনদ এবং বিকাশের সূত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: ইতিহাস কথা কয়’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ ১৯৭১- এ দেওয়া ১৮ মিনিটের ভাষণটি তার স্বভাবসুলভ তাৎক্ষণিক বক্তব্য ছিল, আগে তৈরি করা বক্তৃতা নয়। এটিকে অনেকেই রাজনীতির কবিতা বলে থাকেন। তুলনা করা হয় আব্রাহাম লিংকন, উইনস্টন চার্চিল, মার্টিন লুথার কিং ও পেরিক্লিসের যুগান্তকারী ভাষণগুলোর সঙ্গে। এর মহত্ব ও বিরাটত্বের কারণে ২০১৭ সনের অক্টোবরে জাতিসংঘের এডুকেশন, কালচার ও সায়েন্টিফিক অর্গানাইজেশন, ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের অসাধারণ ভাষণটিকে পৃথিবীর অন্যতম ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

বক্তারা বলেন, ভাষণটির অসাধারণত্ব, এর স্বতঃস্ফূর্ততা, নির্ভীকতা, সম্যক উপলব্ধি ও তেজস্বী উচ্চারণ প্রকৃতপক্ষে বাঙালি জনগণের প্রথমবারের মতো স্বাধীনতার চরম ও পরম আকাক্ষাকে বাঙময় করে তোলে। ভাষণটি অবশ্যই বহুমাত্রিক গুরুগম্ভীর ও ওজনদার। প্রকৃতপক্ষে বাঙালি ও শেখ মুজিবের স্বপ্নসাধনার স্বাধীনতা ও মুক্তির সুস্পষ্ট উচ্চারণ এটি। সামগ্রিক বিচারে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি স্বাধীনতাকে সংজ্ঞায়িত করেছে, চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা অর্জনের দিকনির্দেশনা দিয়েছে, প্রকাশ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের রূপরেখা।  

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা এবং কল্যাণরাষ্ট্রে বিশেষ করে কম ভাগ্যবানদের অর্থনৈতিক মুক্তিসহ সোনার বাংলা গড়ে তোলা। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর বলিষ্ঠ প্রত্যয় আছে এ ভাষণের বাক্যগুলোর অন্তরে অন্তরে।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ৭ই মার্চের সংক্ষিপ্ত ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ইতিহাস ও সমকালীন রাজনীতির বিশ্বস্ত ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। মৌখিক এই ভাষণ যারাই শুনেছেন, তারাই এর অসামান্য মর্ম উপলব্ধি করেছেন। সঙ্গত কারণেই এ ভাষণ পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. এম সাইদুজ্জামান, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক, কবি কাজী রোজী, কবি রুবী রহমান, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, কবি কামাল চৌধুরী, কবি হারিসুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহ-পরিচালক সায়েরা হাবীব।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৯
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।