ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শিশু একাডেমিতে নজরুল স্মরণ

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯
শিশু একাডেমিতে নজরুল স্মরণ

ঢাকা: আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।
সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,
‘হয়নি সকাল, ঘুমো এখন’- মা বলবেন রেগে।
বলব আমি, আলসে মেয়ে ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয়নি সকাল- তাই বলে কি সকাল হবে না ক?

শিশুরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। আর শিশুদের সেসব উচ্ছল ও প্রাণবন্ত স্বপ্নকে যিনি কবিতায় গেঁথে রেখেছেন, তিনি আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম।

আর এই কবির মৃত্যবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘আমরা যদি না জাগি মা ক্যামনে সকাল হবে’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠান।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শিশু একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার।  অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করছে বিভিন্ন শিল্পীরা।  ছবি: বাংলানিউজবিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ও বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ড. রফিকুল ইসলাম এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।  

এতে সভাপতিত্ব করেন শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন।

অনুষ্ঠানে ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে অনেক লেখক সাহিত্যিক এসেছেন, তবে সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে কেউই সেভাবে যেতে পারেননি। কিন্তু কাজী নজরুল ইসলাম তার লেখনীর মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার সেই বাঁধ ভেঙেছেন। হামদ-নাথ, ভজন-কীর্তনের মধ্য দিয়ে তিনি দেখিয়েছেন তার পারদর্শীতা। একইসঙ্গে সেসময় গ্রামের যেসব মৌলভীরা ফতোয়া দিতেন যে গান শোনা হারাম, তাদেরও তিনি ধর্মীয় গানের মধ্য দিয়ে গানের কাছে এনেছেন। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তার অবদান অসামান্য।

সচিব কামরুন নাহার বলেন, আমরা বড় হয়েছি কাজী নজরুল ইসলামের গান শিখে শিখে গেয়ে। এখন তোমরাও সেই গান গাও। তার মতো সুন্দর করে শিশুদের মন বুঝে ছোটদের কবিতা খুব কম লেখকই লিখেছেন। একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে ছোট থেকেই নজরুল চর্চার বিকল্প নেই। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করছে বিভিন্ন শিল্পীরা।  ছবি: বাংলানিউজড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, আমরা বলি নজরুল স্কুল পালাতেন। কিন্তু তা তো স্কুল পালানো নয়। অর্থাভাবে স্কুল থেকে তার নাম কাটা যেতো, কাজের জন্য স্কুল থেকে বেরিয়ে আসতে হতো। ফলে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে কেটেছে তার সময়। আর তিনি যেখানে জন্ম নিয়েছেন, এখনো সেই জায়গাটি অজ পাড়াগাঁ। অথচ এখানেই প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করে তিনি প্রথম হতেন। আর বিভিন্ন কাজ করে মাস শেষে যে আট আনা পারিশ্রমিক পেতেন, তা তুলে দিতেন বাবার হাতে। আমরা বলি নজরুল ডানপিঠে ছিল। কিন্তু তা নয়, বরং সে ছিল একজন নিষ্ঠাবান ছেলে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী তুলে ধরে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির আবৃত্তি প্রশিক্ষাণার্থী জারিন তাসনিম অবনী। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিশু একাডেমির সদস্য আয়শা সিদ্দিকা মণি এবং আদিব কিবরিয়া। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শিশু একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯ 
এইচএমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।