শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুর ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সিডনির ওয়ালি পার্কের অ্যারেনা মঞ্চে ‘প্রভাত ফেরী–কবিতা বিকেল বাংলা সংস্কৃতি উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়। কবিতা, লোকনাটক, আবৃত্তি, চিত্র প্রদর্শনী, গানে মুখর হয়ে ওঠে উৎসবস্থল।
অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান উৎসবের উদ্বোধন করেন।
উৎসবের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় দেবাশিষ দাসের ছবি ‘নিঠুর বোনে বিধুর নিরুপম’। এরপর তামিমা শাহ্রীনের গ্রন্থনা ও পরিচালনায় ‘কবিতা বিকেল: পরম্পরা’র শিশুদের গান ও আবৃত্তির কোলাজ পরিবেশিত হয় কাব্যনাটক ‘টোনাটুনির দেশে’। পরে মঞ্চে ওঠেন স্বনামখ্যাত বুশ কবি ক্যাথি অ্যাডওয়ার্ডস ও মারে অ্যাডওয়ার্ডস। এরপর ‘কবিতা বিকেল’ সদস্যদের সম্মিলিত পরিবেশনায় উপস্থাপিত হয় কবিতাপর্ব ‘প্রলয় নতুন সৃজন বেদন’।
এরপরের ধাপে কবিতা বিকেলে’র সভাপতি মাহমুদা রুণুর আহ্বানে মঞ্চে ওঠেন- ‘প্রভাতফেরী’ পত্রিকার প্রকাশক, অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির পরিচালক সোলায়মান দেওয়ান, পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক, অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির পরিচালক শ্রাবন্তী কাজী আশরাফী, বাংলাদেশ মেডিক্যাল সোসাইটি অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ডা. আয়াজ চৌধুরী, মাল্টিকালচারাল নিউসাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধি শবনম তাভাকল, নিউ সাউথ ওয়েলস সংসদের সহকারী স্পিকার মার্ক কুরি, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান ও নিউ সাউথ ওয়েলস সংসদের হোলসওর্দির সংসদ মেলানিয়া গিবনস। এ সময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পরে বক্তব্য দিতে উঠে প্রভাতফেরী’র প্রধান সম্পাদক শ্রাবন্তী কাজী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও সাহিত্যিক বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করা আমার জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। আর সে জন্যই সিডনি থেকে প্রভাত ফেরীর প্রকাশ। পত্রিকাটি জন্মলগ্ন থেকেই প্রবাসে বেড়ে ওটা প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছে। কবিতা বিকেল বাংলা সংস্কৃতি উৎসবে প্রভাতফেরী ও অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি যুক্ত হতে পেরে গর্ববোধ করছে।
অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে সিডনিতে একুশে বইমেলা আয়োজনের অন্যতম উদোক্তা নেহাল নিয়ামুল বারীকে গুণীজন সম্মাননা দেওয়া হয়। এরপর পরিবেশিত হয় কবিতা বিকেলের নতুন প্রযোজনা ‘হাড়েরও ঘরখানি’।
সন্ধ্যার পর পরিবেশিত হয় আঙ্গিক থিয়েটারের নাটক ‘দেবী সর্পমস্তা’। পরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন অস্ট্রেলিয়ান শিল্পী জন প্রভুদান ও তাঁর বন্ধুরা। সবশেষে মঞ্চে ওঠেন ভারতের প্রখ্যাত বাঙালি সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার মৌসুমী ভৌমিক। গানের পাশাপাশি আদিবাসী, শরণার্থীসহ সমকালীন বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন মানতাবাদী এ শিল্পী।
‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি সাগরের ঢেউয়ে চেপে নীলজল দিগন্ত ছুঁয়ে এসেছ’ গানের মধ্য দিয়ে নিজের পরিবেশনায় যতি টানেন তিনি। মাঠভর্তি দর্শকশ্রোতাও এসময় তার সঙ্গে গলা মেলায়। সবশেষে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে পর্দা নামে এবারের ‘প্রভাতফেরী-কবিতা বিকেল’ সংস্কৃতি উৎসবের।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৯
এইচজে