ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

উৎসবমুখর বাংলা একাডেমির বার্ষিক সভা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
উৎসবমুখর বাংলা একাডেমির বার্ষিক সভা বাংলা একাডেমির বার্ষিক সভা: ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সকাল থেকেই মুখরিত বাংলা একাডেমির আঙিনা। ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা সদস্যদের আনাগোনায় সেখানে সারাদিনই ছিল উৎসবের আমেজ। উপলক্ষ বাংলা একাডেমির সাধারণ পরিষদের ৪২তম বার্ষিক সভা। 

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার পরিচালনায় সঙ্গীত সংগঠন সুরের ধারার শিল্পীদের সমবেতকণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়াত গুণী ব্যক্তিদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভায় একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন। একাডেমির সদস্যরা বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন। মহাপরিচালক সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং উত্থাপিত প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখেন।  

সভায় ২০১৮ সালের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণীতে সারাদেশ থেকে আসা একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য ও সদস্যদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন ঘোষণা করেন বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৯-এর সভাপতি এবং একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

সভায় দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপপ্রাপ্তরা হচ্ছেন সৈয়দ আনোয়ার হোসেন (শিক্ষা ও গবেষণা), শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (প্রকৌশল), জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক (চিকিৎসা), কুমুদিনী হাজং (সমাজসেবা), কাঙ্গালিনী সুফিয়া (সঙ্গীত), আলী যাকের (সংস্কৃতি) ও আসাদুজ্জামান নূর (সংস্কৃতি)। ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, কুমুদিনী হাজং, কাঙ্গালিনী সুফিয়া ও আলী যাকেরের অনুপস্থিতিতে তাদের পরিবারের সদস্যরা ফেলোশিপ গ্রহণ করেন।

এদিন ২০১৯ সালের পাঁচটি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়। সাহিত্যিক মোহম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন প্রাবন্ধিক গবেষক ফরহাদ খান। মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার পেয়েছেন কবি মহাদেব সাহা। সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক পাপড়ি রহমান। মেহের কবীর বিজ্ঞানসাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন অধ্যাপক শিশির কুমার ভট্টাচার্য। নিসর্গ আখ্যান গ্রন্থের জন্য হালীমা-শরফুদ্দীন বিজ্ঞান পুরস্কার পেয়েছেন মোকারম হোসেন।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণায় কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে মানুষের প্রত্যাশা বিপুল। আজকের সাধারণ সভায়ও একাডেমির সদস্যরা নানা মতামত ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। আমরা আশা করি, আগামী দিনগুলোতে বাংলা একাডেমি সবার সহযোগিতায় তার কার্যক্রম আরও সুচারুরূপে পালন করতে সক্ষম হবে।

বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমি সাম্প্রতিক সময়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও গবেষণা খাতে নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করে চলেছে। এখন একাডেমি থেকে সাতটি বিষয়ভিত্তিক সাময়িকপত্র নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা এই প্রতিষ্ঠানের কর্মচাঞ্চল্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের সাক্ষ্য বহন করে।

সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভা উপলক্ষে বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসে নবনির্মিত বাংলা একাডেমি লোকঐতিহ্য যাদুঘর সর্বসাধারণের পরির্দশনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
ডিএন/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।