মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। একই সঙ্গে সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিদের হাতে সম্মাননা পদক ও উত্তরীয় তুলে দেওয়া হয়।
শিল্প-সাহিত্যিবিষয়ক পত্রিকা সম্পাদনার জন্য আজীবন সম্মাননা:
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (নতুন দিগন্ত) , আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ (কণ্ঠস্বর), রামেন্দু মজুমদার (থিয়েটার), আবুল কাসেম ফজলুল হক ( লোকায়ত)
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের লিটলম্যাগ সম্মাননা:
অনিন্দ্য, চর্যাপদ, লিরিক, নিসর্গ, জীবনানন্দ, প্রতিশিল্প, দূর্বা, মেঘ ও কারুভাষ
লিটলম্যাগ প্রকাশনা ও প্রতিষ্ঠান সম্মাননা:
উলুখড় , ঢাকা এবং কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র
লেখক সম্মাননা:
গৌতম চৌধুরী, সরকার মাসুদ, রোকসানা আফরীন, শিবলী মোক্তাদির, কাজী নাসির মামুন, মাদল হাসান ও জুয়েল মোস্তাফিজ
চিত্রশিল্পী ও আলোকচিত্রী সম্মাননা:
পীযুষ দস্তিদার, খায়রুল মোমিন দুলাল
অনুষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, লিটল ম্যাগাজিন কিন্তু সবার জন্য না। এখানে সবাই লিখবে তা কিন্তু না। লিটল ম্যাগাজিন বা ছোটকাগজে বিদ্রোহ থাকে, একটা স্পর্ধা থাকে। এটা নতুনত্বের কাগজ। এটা নিয়মহীনতা এবং ব্যতিক্রমের কাগজ। এজন্য এতে একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীই লিখে থাকেন। তবে সুবিধা হচ্ছে, বড় কাগজকে লেখা খুঁজে বেড়াতে হয়, কিন্তু ছোট কাগজ হওয়ায় লেখাই তাকে খুঁজে নেয়।
আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত আরেক গুণী রামেন্দু মজুমদার বলেন, আজকাল লিটল ম্যাগাজিন অনেক বের হয়, কিন্তু একটি সমস্যা থেকে আমরা কোনোভাবেই বের হতে পারছি না, আর সেটি হচ্ছে বিপণন ব্যবস্থা। ছোটকাগজগুলো আমরা দোকানে দোকানে দিয়ে আসলে শুধু টাকাই খরচ হয়, কিন্তু টাকা পাওয়া যায় না। তরুণ উদ্যোক্তা ও সম্পাদকরা যদি নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করেন, তাহলে বোধ হয় একটা সমাধান হয়।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- লোক সম্পাদক অনিকেত শামীম। তিনি বলেন, আজ লোক যাদেরকে সম্মাননা দিচ্ছে, বিশেষ করে আজীবন সম্মাননা, তারা বাংলাদেশের অগ্রগণ্য চিন্তাবিদ, নাট্যব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ। তারা নিজেদের কাজের মধ্যেই স্বীকৃত। সেই ষাট-এর দশক থেকে তারা ছোটকাগজ সম্পাদনা করে আসছেন। তাদের নানা কর্মের মধ্যে এটিও এক অনবদ্য অবদান। সেই জায়গা থেকে তাদের সম্মানিত করতে পেরে আমরা গর্বিত।
অনিকেত শামীম আরও বলেন, বাংলা সাহিত্যে লোক পত্রিকা হয়তো কোনো অবদান রাখতে পারেনি। তবে তরুণ লেখকদের প্রণোদনার ক্ষেত্রে এ পত্রিকা গুরুত্বের দাবি রাখে। যেসব লেখক সেভাবে পরিচিত ছিলেন না, তাদের নিয়ে কাজ করেছে লোক। আজও সেই কাজটি লোক অব্যাহত রেখেছে। এসব ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে আমরা অংশ নিয়েছি। তবে আগামীতে লোক-এর নানামুখী কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
১৯৯৯ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় ছোটকাগজ ‘লোক’। ১০ম বছর থেকে এ পত্রিকার উদ্যোগে লেখক সাহিত্য পুরস্কার শুরু করা হয়। অনুষ্ঠানে এক ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে লোকের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দুই দশক পরিক্রমার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়।
এরপর লোক-এর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত সংখ্যার পাঠ উন্মোচন করেন অতিথিরা।
এছাড়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন- বাংলা একাডেমির পরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি ফরিদ কবির, কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদসহ বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক ও সাহিত্য-সংস্কৃতি সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে দেশের শিল্পসাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
এসএইচএস/এইচজে