ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

করোনাকালে শিল্পী সঞ্জয় দের নানামুখী মানবতাবাদী উদ্যোগ

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২০
করোনাকালে শিল্পী সঞ্জয় দের নানামুখী মানবতাবাদী উদ্যোগ সঞ্জয় দে, ফাইল ফটো

ঢাকা: ইউরোপের অন্যতম প্রধান সব্যসাচী সংগীতশিল্পী, সুরকার ও গীতিকার সঞ্জয় দে করোনার ক্রান্তিলগ্নে আর্ত-পীড়িত মানুষ এবং দুস্থ শিল্পীদের সাহায্যার্থে শুরু করেছেন নানাবিধ মানবতাবাদী উদ্যোগ। ইতোমধ্যেই তা দেশ-বিদেশের হাজার হাজার দর্শকের নজর কেড়েছে; এবং প্রশংসা কুড়িয়েছে সাহিত্য ও সংগীতপ্রেমীসহ বিভিন্ন শিল্পবোদ্ধা মহলের।

এসব উদ্যোগের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে কলকাতার জনপ্রিয় সংগীত প্রযোজনা সংস্থা শ্রীনিবাস মিউজিক। লন্ডন বারা অব হ্যারোর ডেপুটি কাউন্সিলর গজনফর আলী এবং লন্ডনের বিখ্যাত চ্যারিটি সংস্থা স্ট্রিটলিংকের কর্মকর্তারা এক বিশেষ বার্তায় সঞ্জয় দের এসব অভিনব উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

গত ৭ জুন মঙ্গলবার সঞ্জয় দের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘নিয়ম’ এর উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে বাংলাদেশ, ভারত, আরব আমিরাত ও ব্রিটেনের স্বনামধন্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় একটি অবিস্মরণীয় মেগা কনসার্ট। এই কনসার্টের মাধ্যমে সংগৃহীত তহবিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বণ্টন করা হয়।

এছাড়াও তিনি ভারতের রাজস্থানের বারনামা জাগির নামে একটি গ্রামের লোকশিল্পীদের জন্যও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই গ্রামের লোকশিল্পীরা মূলত বিয়ে, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কোভিডের এই ক্রান্তিকালে তাদের আয়ের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় তাদের পাশে দাঁড়াবার অনন্য ভাবনা থেকেই শিল্পী সঞ্জয় দে ‘মিউজিক ফর হিউম্যানিটি’ শিরোনামে তার বিবিধ সংগীত উদ্যোগের মাধ্যমে রাজস্থানের লোকশিল্পীদের জন্য তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। সম্প্রতি ব্রিটেনে গৃহহীনদের অন্যতম প্রধান সেবা সংস্থা স্ট্রিটলিংকের জন্যও কনসার্টের মাধ্যমে তহবিল গঠন করেন তিনি।

শিল্পী সঞ্জয় দে বর্তমানে ভারতের মৃৎশিল্পী সম্প্রদায়ের জন্য তহবিল গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছেন। লকডাউনের কারণে আসন্ন পূজায় তাদের সমস্ত উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখানেও তিনি কনসার্টের মাধ্যমে তহবিল গঠনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।

এত সব মানবতাবাদী উদ্যোগের পাশাপাশি থেমে নেই তার নিজের সৃজনশীল কর্মকাণ্ডও। ‘ব্যবধান’ শীর্ষক একটি অপূর্ব পরিবেশনা মুক্তি পায় গত ২৫ জুলাই। শিল্পী সঞ্জয় দের কথা ও সুরে ‘আর তো কোন কথা নেই বলার’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন এ সময়ের অত্যন্ত প্রতিভাবান শিল্পী সিসপিয়া ব্যানার্জি এবং সংগীতায়োজনে ছিলেন কুন্দন সাহা। আবার আসন্ন পূজা উপলক্ষে শিল্পী এরিনা মুখার্জির সঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে টপ্পাঙ্গের একখানা রবীন্দ্রসংগীতও।

রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যেই সংগীতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের জন্য পেয়েছেন আর ডি বর্মন পুরস্কার। ২০০০ সালে বাল্টিমোরে অনুষ্ঠিত সম্মানজনক বিশ্ব বাংলা সম্মেলনে সংগীত পরিবেশন করার পাশাপাশি সঞ্জয় দে ব্রিটেনে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘নিয়ম’ (NEOM - New Era of Music) নামে একটি জনপ্রিয়  সাংস্কৃতিক সংগঠন। নিয়ম ছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন রবিকা এবং রবি ভারতী নামে আরও দুটি সংগঠন। রবি ভারতীর মাধ্যমে এবং নিজের একান্ত উদ্যোগে তিনি ব্রিটেনে বেড়ে ওঠা শিশুদের এবং ব্রিটিশ-এশীয় ডায়াসপোরাদের সংগীত শিখিয়ে যাচ্ছেন গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২০
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।