ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

৬৬ বছরে বাংলা একাডেমি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২০
৬৬ বছরে বাংলা একাডেমি

ঢাকা: সময়ের পথপরিক্রমায় ৬৬ বছরে পা রাখলো বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ঋদ্ধ হয়ে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক এই প্রতিষ্ঠানটি।

ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ‘বর্ধমান হাউসের’ সম্মুখস্থ বটতলায় (আজকের নজরুল মঞ্চ) উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পূর্ব-বাংলার তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার ‘উদ্বোধনী ভাষণ’ পাঠ করেন। পূর্ব-বাংলার তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী আশরাফ উদ্দীন আহমদ চৌধুরীও অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।

বাংলা একাডেমির প্রথম সচিব ছিলেন মুহম্মদ বরকতুল্লাহ, তার পদবি ছিল বিশেষ কর্মকর্তা বা স্পেশাল কর্মকর্তা।   প্রথম পরিচালক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক মুহম্মদ এনামুল হক, প্রথম মহাপরিচালক ছিলেন অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম। একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ ছিল আহমদ শরীফ সম্পাদিত দৌলত উজির বাহরাম খানের ‘লাইলী মজনু’। সেই থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে ছয় সহস্রাধিক বই।

বইয়ের পাশাপাশি নিয়মিত প্রকাশনাও রয়েছে বাংলা একাডেমির। ‘বাংলা একাডেমি পত্রিকা’, ‘উত্তরাধিকার', ‘বাংলা একাডেমি বার্তা’, ‘বাংলা একাডেমি বিজ্ঞান পত্রিকা’, ‘বাংলা একাডেমি জার্নাল’ ও ‘ধানশালিকের দেশ’ নামে ছয়টি নিয়মিত প্রকাশনা রয়েছে।

চারটি বিভাগের মাধ্যমে বাংলা একাডেমি বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করছে। সেগুলো-গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ;  ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও পত্রিকা বিভাগ; পাঠ্যপুস্তক বিভাগ এবং  প্রাতিষ্ঠানিক, পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ বিভাগ।

বাংলা একাডেমির আয়োজনে প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। সেসঙ্গে দেওয়া হয় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, যা দেশের অন্যতম সম্মানের এক পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া রবীন্দ্র পুরস্কার, জসীমউদদীন সাহিত্য পুরস্কার, মাজহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার, সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার, মেহের কবীর বিজ্ঞানসাহিত্য পুরস্কার, হালীমা-শরফুদ্দীন বিজ্ঞান পুরস্কার ও প্রবাসী সাহিত্য পুরস্কার দিয়ে থাকে।

এসবের পাশাপাশি বর্ধমান হাউসে ভাষা আন্দোলন জাদুঘর জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘর এবং লোকঐতিহ্য জাদুঘর পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনালয় নামে একটি গ্যালারিও রয়েছে একাডেমির অধীনে।

এদিকে বাংলা একাডেমির ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। সকালে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে।

সকাল ১১টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘সবার আগে সংস্কৃতি সবার সঙ্গে সংস্কৃতি’ শীর্ষক বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা-২০২০ দেবেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
ডিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।