ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সংস্কৃতিই পূর্ববাংলার মানুষকে ‘পাকিস্তানি’ হতে দেয়নি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২০
সংস্কৃতিই পূর্ববাংলার মানুষকে ‘পাকিস্তানি’ হতে দেয়নি  ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: সংস্কৃতিই পূর্ববাংলার মানুষকে ‘পাকিস্তানি’ হতে দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) ‘সবার আগে সংস্কৃতি সবার সঙ্গে সংস্কৃতি’ শীর্ষক বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একক বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

 

সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, পূর্ববাংলার মানুষ তার সংস্কৃতির কারণেই পাকিস্তানকে মন থেকে গ্রহণ করতে পারেনি। সংস্কৃতিই পূর্ববাংলার মানুষকে ‘পাকিস্তানি’ হতে দেয়নি। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে সংস্কৃতির ভিন্নতা ছিল।  

বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে চলছে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি। যার অংশ হিসেবে সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি এবং বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।  

এরপর একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

আয়োজনের শুরুতে সম্প্রতি প্রয়াত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।  

একক বক্তা সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, সংস্কৃতি নিজে গড়ে ওঠে, সংস্কৃতিকে বানানো যায় না। বাঙালির সংস্কৃতি জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিস্তৃত- অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতি, সমাজ, ধর্ম। এর যা কিছু বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিকূল, তার স্থান এখানে হবে না।  

তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের দুই দশকের সংগ্রামকে তাই চিহ্নিত করা যায় ভাষা আন্দোলন নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগ্রামের পরিণতিরূপে।

শামসুজ্জামান খান বলেন, সংস্কৃতি এক চলমান ও জীবন্ত বিষয়। একে কোনো সংজ্ঞায় আবদ্ধ করা যায় না। গতিময়তাই এর নান্দনিকতা। বাংলা একাডেমি বাঙালির জীবনে সংস্কৃতির সংগ্রামকেই সার্থক করে তুলেছে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যতদিন বাংলাদেশ স্থিত থাকবে, ততদিনই বাংলা একাডেমি তার প্রকৃতি মহিমায় উজ্জ্বল থাকবে।  

হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা এবং বিকাশের জন্য। ছয় দশকের পরিক্রমায় আমরা একথা দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করতে পারি- বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা বিধানের একাডেমিক দায়িত্ব পেরিয়ে বাংলা একাডেমি আক্ষরিক অর্থেই বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক-প্রতিষ্ঠান।
   
অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক নূরুন্নাহার খানম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
ডিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।