ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শেষ হলো গ্রন্থীর “হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ” সিরিজ

শাহীন মিতুলি, যুক্তরাজ্য থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
শেষ হলো গ্রন্থীর “হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ” সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ‘হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ’ শীর্ষক আয়োজনের শেষ পর্ব

ব্রিটেনের দক্ষিণ এশীয় সাহিত্য, দর্শন এবং সমাজতত্ত্বের ছোটকাগজ গ্রন্থীর ফেসবুক লাইভ সিরিজ ‘হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ’ শীর্ষক আয়োজনের শেষ পর্বে অংশ নেন বাংলাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি ও প্রাবন্ধিক হাবিবুল্লাহ সিরাজী এবং সুইডিশ-পেরুভিয়ান কবি আজরিল বেকাল।  

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই লাইভ নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবি, লেখক এবং কবিতাপ্রেমী দর্শকরা।

মেক্সিকান কবি রোসানা কামারেনা বলেন, “প্রত্যেক শনিবার গ্রন্থীর এই লাইভ নিয়মিত জীবন যাপনের অংশ হয়ে উঠেছিল। বিশ্বসাহিত্যের গৌরবময় সম্পদের প্রচারে গ্রন্থী নিশ্চয়ই এরকম আরও বিভিন্নমুখী উদ্যোগ নিয়ে হাজির হবে। ”

কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, “গ্রন্থীর এই আয়োজন আমার মতো বাংলা ভাষার একজন কবির জন্যে বিশ্বের নানা রকমের দর্শক-শ্রোতার কাছে পৌঁছানোর একটা বিরল সুযোগ। এজন্যে আমি গ্রন্থীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। ”

কবি হাফিজ রশীদ খান গ্রন্থীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “একবিংশ শতকের সেরা আয়োজন গ্রন্থীর এই বৈশ্বিক সম্ভাষণ। ”

কবি শরৎচান্দ থিয়াম বলেন, “এই অনুষ্ঠান সমকালীন কবিতায় প্রাণ সঞ্চারিত করেছে। ”

লিডস মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক কবি অজ হার্ডউইক বলেন, “কবিতার ফাঁকে কবিতা সংক্রান্ত কথন এই উদ্যোগের অন্যতম আকর্ষণ এবং এজন্যেই আদ্যোপান্ত উপভোগ করেছি প্রায় প্রতিটি পর্ব। ”

কবি জুয়েল মাজহার বলেন, “এই মহান উদ্যোগ সর্বোতভাবে স্বর্গীয়। যে ভালোবাসার বাণী গ্রন্থী প্রচার করতে চায় তাই ফলতঃ শিল্প এবং মানব জীবনের আরাধ্য। এই অভিনব উদ্যোগের জন্য গ্রন্থীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। ”

গত ২৭ জুন শুরু হওয়া কুড়ি পর্বের এই সিরিজে সারা বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশ থেকে খ্যাতনামা সব কবিরা অংশ নিয়েছেন। ব্রিটেনে ভারতীয় মার্গ সঙ্গীতের শীর্ষ সংস্থা সৌধ ও বাংলা লোকগানের সংগঠন রাধারমণ সোসাইটির সার্বিক সহযোগিতায় সূচিত এই অভিনব উদ্যোগের সঞ্চালনায় ছিলেন কবি টি এম আহমেদ কায়সার। অনুষ্ঠানের নেপথ্য সমন্বয় এবং পরিকল্পনায় ছিলেন গ্রন্থীসম্পাদক কবি শামীম শাহান।

কবি শামীম শাহান বলেন, “গ্রন্থী গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাসাহিত্য, কবিতা ও সমাজতত্ত্বের বিকাশে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ৯০ এর দশকে বাংলাদেশ থেকে গ্রন্থীর যাত্রা শুরু হলেও আজ বিশ্বের সর্বত্র গ্রন্থীর পদচারণা। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যারা গ্রন্থীর এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তাদের সবার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালাবাসা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে ‘হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ’ সিরিজে অংশগ্রহণকারী সকল কবি, শুভানুধ্যায়ীসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যারা এই অনুষ্ঠানকে সফল করে তোলার জন্যে নেপথ্যে সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই উদ্যোগটি শেষ হয়ে যাবার কারণে যারা ব্যথিত তাদের জন্য সুসংবাদ এই যে, গ্রন্থী অচিরেই আরও নানামুখী উদ্যোগ নিয়ে হাজির হবে এই কোভিড-কাল এবং কোভিড-পরবর্তী কালেও। ”

কবি টি এম আহমেদ কায়সার বলেন, “সামাজিক দূরত্বের কারণে আমরা যখন ঘরে বসে আছি, সঙ্গ-নিরোধের এই কঠিন সময়ে কবিতা আমাদের শুশ্রূষা ও মানসিক প্রশান্তি দিতে পারে। এ সময়ে একমাত্র কবিতাই পারে মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধন ঘটিয়ে দিতে- এটা পরীক্ষিত সত্য। ”

গ্রন্থীর এই ধারাবাহিক আয়োজন সম্পর্কে তিনি বলেন,  “গ্রন্থী দক্ষিণ এশীয় সাহিত্যের পাশাপাশি  বিশ্বসাহিত্য, দর্শন ও সমাজতত্ত্বের প্রচার ও প্রসারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত যে সকল কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, চলচ্চিত্র পরিচালক গ্রন্থীর ফেসবুক লাইভ সিরিজে অংশ নিয়েছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ‘হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ’ গ্রন্থীর একটি অভিনব উদ্যোগ যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে, সাহিত্যের সঙ্গে ভালোবাসার এক সুদৃঢ় সেতু রচনা করতে সক্ষম হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ”

শেষ পর্বে কবি জয় গোস্বামী এবং কবি আসাদ চৌধুরীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও যান্ত্রিক জটিলতার কারণে তারা যুক্ত হতে পারেননি।  ‘হানড্রেড পোয়েটস্ এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ফর লাভ’ সিরিজে কবিতা পাঠ করেছেন বাংলাদেশ থেকে জুয়েল মাজহার, শামীম রেজা, আসাদ মান্নান, জফির সেতু, ফরিদ কবির, চঞ্চল আশরাফ, কুমার চক্রবর্তী, ওবায়েদ আকাশ, শাহেদ কায়েস, কামাল চৌধুরী, হেনরি স্বপন, শেলী নাজ, মোস্তাক আহমাদ দীন, আয়েশা ঝরনা, হাফিজ রশীদ খান, শাকিরা পারভীন, সাজ্জাদ শরিফ, জুনান নাশিত, সোহেল হাসান গালিব, জাকির জাফরান, আলতাফ শাহনেওয়াজ, মোহাম্মদ সাদিক, মুস্তাফিজ শফি, জাহিদ সোহাগ, খালেদ হোসেইন, রাজু আলাউদ্দিন, আলফ্রেড খোকন, এ কে শেরাম, সরকার  মাসুদ, মোহাম্মদ সাদিক, জাফর আহমেদ রাশেদ, জিল্লুর রহমান ও বিজয় আহমেদ প্রমুখ।  
 
এতে ভারত থেকে যুক্ত হন কবি জহর সেনমজুমদার, বিভাস রায় চৌধুরী, রশেল পাটেকর, রাহুল পুরকায়স্থ, সেবন্তী ঘোষ, নন্দিনী মেহরা, গৌতম গুহ রায়, সুমন গুণ, রণজিৎ দাশ, সুতপা সেনগুপ্ত, নিখিলেশ রায়, দেবাশীষ পারাসার, শৌভিক দে সরকার, একরাম আলী, বনানী চক্রবর্তী, সৌমনা দাশগুপ্ত, অশোক দেব, মৃদুল দাশগুপ্ত, মোনা দাশ, বল্লরী সেন, যশোধরা রায়চৌধুরী সুদেষ্ণা মৈত্র, শরৎচান্দ থিয়াম, মৈরাংথেম বরকন্যা প্রমুখ।

এছাড়াও এতে যোগ দেন ব্রিটিশ কবি শন টমাস, শেরিনা লি সাত্তি, ডেভিড লি মরগান, রোজ ড্রু, ম্যাথ জোন্স, আইরিশ কবি শিভন ম্যাকমাহোন, স্প্যানিশ কবি সের্গেই এস্ক্রিবানো, কিউবান কবি স্নেজহিনা গুলুবোভা, সুইডিশ কবি ব্যাংক্ট ও বিওরখলুন্ত, মিশরীয় কবি সামাহ মুস্তাফা, ইরানি কবি আলি রেজা আবিজ, পেরুভিয়ান কবি মিখাইলা হুগলুন্ত, আলবেনিয়ান-আমেরিকান কবি ইউসুফ আলাওই, মেক্সিকান কবি রোসানা কামারেনা, নিকারাগুয়ান কবি মারিয়া পালিতাচি, সারবিয়ান কবি দানিয়েলা ত্রাসকোভিচসহ ২৫টিরও বেশি দেশের শীর্ষস্থানীয় কবিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।