পাবনা: পাবনায় বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো যাত্রা ‘নাচমহল’। শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় জেলার অন্যতম যাত্রাপালা সংগঠন ওজিএম থিয়েটায়ের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় ‘নাচমহল’।
ভারতের বিখ্যাত যাত্রাপালা লেখক শ্রী ভৈরবনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচনা ও ছকির উদ্দিনের নির্দেশনায় পাবনা সদরের গয়েশপুর ওজিএম থিয়েটারের পরিবেশনায় ঐতিহ্যবাহী বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের মঞ্চে প্রর্দশন হয় যাত্রাপালা নাচমহল।
যুবরাজ এবং শান নিবেদিত এ যাত্রায় পনেরো জন অভিনয় শিল্পী আর দশজন মঞ্চ সহযোগীর সমন্বয়ে প্রায় দেরঘণ্টা মঞ্চস্থ হয়। করোনা পরিস্থির এ সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শক প্রবেশ করে হলরুমে। দীর্ঘদিন পরে পাবনা বনমালী অঙ্গন ছিলো দর্শকে পরিপূর্ণ।
যাত্রাপালা দেখতে আসা নাট্য সংগঠন ড্রামা সার্কেলের জীবন সদস্য সরোয়ার উল্লাস বলেন, দীর্ঘদিন পরে যাত্রাপালা দেখলাম। আগে শীতের সময়ে গ্রামগুলোতে যাত্রাপালার আয়োজন করা হতো, সারারাত জেগে যাত্রা দেখতাম। সেই দিনের কথা মনে পরে গেলো। বেশ ভালো করেছে অভিনয় শিল্পরা। আরও বেশিবেশি করে তাদের সুযোগ দেওয়া উচিৎ।
কথা হয় এ যাত্রাপালার নির্দেশক ছকির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, খুব কষ্ট করে ধরে রেখেছি এ দলটিকে। গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের সঙ্গে নিয়ে রাতে রিহার্সেল করেছি। ধর্মের গোরামীর মধ্যেও অভিনয়ের জন্য নারী শিল্পীর অভাব পূরণ করেছি। করোনার সময়ে এ মানুষগুলো অনেক কষ্টে দিনযাপন করেছে। তবু শেকড়ের টানে শিল্পের ভালোবাসায় আবারও একত্রিত হয়েছি আমরা। অর্থলোভে নয় ভালোবাসার টানে। পাবনা বনমালী আমাদের সুযোগ দিয়েছে। এর জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা কর্তৃপক্ষের প্রতি।
পাবনার অন্যতম নাট্য ব্যক্তিত্ব টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান শেলী বলেন, কর্মব্যস্ত সময়ের মধ্যে শিল্পচর্চার সময় করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রাশিল্পকে টিকিয়ে রাখার এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, করোনার জন্য সারাদেশে সাংস্কৃতি কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহে একদিন কোনো না কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিবেশনা করার। সেই ধারাবাহিকতায় মুজিববর্ষে ও বিজয় দিবসে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২০
ওএইচ/