ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সাহিত্যে চৌর্যবৃত্তি: শাহীন ও দারার বই ছাপা হলো অন্যের নামে

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
সাহিত্যে চৌর্যবৃত্তি: শাহীন ও দারার বই ছাপা হলো অন্যের নামে সাইদ হাসান দারা ও বই দুটির প্রচ্ছদ

গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের উপন্যাস ‘ইন ইভ্‌ল আউয়ার’ এর অনুবাদ সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। অনুবাদক এইচ. এম. শাহীন ও সাইদ হাসান দারা।

সময় প্রকাশন বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ প্রকাশ করে ২০১৭ সালে। সেই একই বই কুঁড়েঘর প্রকাশনী হুবহু কপি করে ২০১৯ সালে প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কুঁড়েঘর প্রকাশিত বইটিতে অনুবাদক হিসেবে মিজানুর রহমান উল্লেখ করা হলেও এই নামে কোনো অনুবাদক নেই বলে অভিযোগ করেছেন সাইদ হাসান দারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইচ. এম. শাহীন ও আমার অনুবাদে  ‘ইন ইভ্‌ল আউয়ার’ প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে সময় প্রকাশন থেকে। ২০১৭ সালে বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ বের হয়। ২০১৯ সালে অনলাইনে আমরা দেখতে পাই বইটির আরও একটি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী হয়ে সেই বইটা কিনি। পড়ে দেখতে পাই হুবহু আমাদের বই ছাপা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এমনকি গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের সাহিত্যকর্ম নিয়ে আমার একটি লেখা আজকের কাগজের ‘সুবর্ণরেখা’য় প্রকাশিত হয়েছিল। সেই লেখা কুঁড়েঘর প্রকাশিত বইয়ে নির্ঘণ্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তাদের প্রকাশিত বইয়ে এমনকি আমাদের ভুল বানানগুলোও রয়ে গেছে!

অনুবাদক সাইদ হাসান দারা আরও বলেন, এ ব্যাপারে কুঁড়েঘর প্রকাশনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের একজন বলেন বিষয়টা দেখছি। এরপর আর যোগাযোগ করেনি। তাদের নম্বরে ও মেইলে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি কিন্তু আর ফোন ধরেনি, কোনো উত্তর দেয়নি।

কোনো উপায়ান্ত না দেখে বাংলা একাডেমিতে অভিযোগ করেছেন অনুবাদক সাইদ হাসান দারা। লিখিত অভিযোগের কপি বুধবার (২৪ মার্চ) বাংলা একাডেমিতে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।

বই দুটির প্রচ্ছদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঔপন্যাসিক স্বকৃত নোমান। তিনি লিখেছেন— “পাশাপশি দুটি বই। প্রথমটি প্রকাশিত সময় প্রকাশন থেকে, ২০১৬ সালে। অনুবাদক এইচ.এম শাহীন ও সাইদ হাসান দারা। দ্বিতীয়টি প্রকাশিত কুঁড়েঘর প্রকাশনী থেকে, ২০১৯ সালে। অনুবাদক মিজানুর রহমান। কিন্তু দুটি বইয়ের অনুবাদ হুবহু এক। দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন, ড্যাশ, হাইফেন, ডট সবই এক।

বোঝাই যাচ্ছে একজনের অনুবাদ আরেকজন মেরে দিয়েছে। মূল অনুবাদ কার? সাইদ হাসান দারা এই ধরনের কাজ করবেন, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। অনুবাদক হিসেবে তিনি পরিচিত, খ্যাতিমান। সময় প্রকাশনের ফরিদ আহমেদও দায়িত্বশীল প্রকাশক।

তবে কি সময় প্রকাশনীর বইটি মিজানুর রহমান হুবহু তার নামে মেরে দিলেন? হ্যাঁ, তাই দিয়েছেন। কিন্তু কে এই মিজানুর রহমান? বইয়ের ব্লার্বে তার ছবি বা পরিচিতি নেই। বোঝাই যাচ্ছে কুঁড়েঘর প্রকাশনী ইচ্ছে করেই তার ছবি ও পরিচিতি আড়াল করেছে। তারা জানে বাস্তবে এই নামে কোনো অনুবাদকের অস্তিত্ব নেই। সময় প্রকাশনীর বইটি হুবহু তারা ছেপে দিয়েছে। একজন অনুবাদকের নাম দিতে হয় বলেই মিজানুরের নামটি দিয়েছে।

বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতে এই ধরনের চৌর্যবৃত্তি কুম্ভীলকবৃত্তি চলছেই। যার যা ইচ্ছা তাই করছে। এসবের রাশ টেনে ধরা প্রয়োজন। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১/আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।