ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বুলবুল চৌধুরীর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২১
বুলবুল চৌধুরীর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা বুলবুল চৌধুরীর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: এক ভক্তকে অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী লিখেছিলেন—জীবনে বেঁচে থাকাটাই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিস্ময়। এ বিস্ময় কাটিয়েই যেন চিরবিদায় নিলেন তিনি।

রোববার (২৯ আগস্ট) সকালে সিংটোলা জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হয় বুলবুল চৌধুরীর মরদেহ। সেখানে বেলা ১১টার দিকে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বুলবুল চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি ও জাতীয় কবিতা পরিষদ।

এছাড়াও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ, প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, আলমগীর সিকদার লোটন, শাহাদাত হোসেন, শ্যামল পাল, ছড়াকার আমীরুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম প্রমুখ।

বুলবুল চৌধুরীর ছেলে রাফী চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে শুধু চাই সবাই আমার বাবার বই পড়ুক। তার শেষ ইচ্ছে ছিল তাকে যেন মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা গোছানো মানুষ ছিলেন না। তার রচনাগুলো বিক্ষিপ্ত আকারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তার বন্ধুরা আমাকে কথা দিয়েছেন, রচনাগুলো এক করতে সাহায্য করবেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, করোনার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমরা শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনের প্রায় শতাধিক মানুষকে হারিয়েছি। এতে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে আমাদের শিল্প-সাহিত্য অঙ্গন। শনিবার বুলবুল চৌধুরী, শেখ আবদুল হাকিম ও আতাউর রহমানের মতো তিনজন সাহিত্যিক মারা গেছেন। আজ বুলবুল চৌধুরীকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম, তাকে স্মরণ করব। বুলবুল চৌধুরীর বিকল্প শুধু তিনিই।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, বুলবুল চৌধুরী আমার বন্ধু। আমরা প্রায় সমবয়সী। তিনি বিনয়ী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি যে প্রতিভাবান তা বোঝা যেত না।

মোহাম্মদ নুরুল হুদা আরও বলেন, গল্প লিখে পরিচিত হলেও বুলবুল চৌধুরী জীবনের শুরুতে কবিতা ও ছড়া লিখেছেন। তার গল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের অভিজ্ঞতা পাওয়া যেতো। তিনি সমকালীন ধারা থেকে আলাদা হয়ে সাহিত্যচর্চা করেছেন। জীবনের জন্য, জীবনের বৃহৎ পেক্ষাপটে তিনি গল্প লিখেছেন। বাংলা একাডেমি বুলবুল চৌধুরীর রচনাবলী প্রকাশের চেষ্টা করবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, বুলবুল চৌধুরী কখনও শালীনতার বাইরে লেখেননি। পরিশীলিতভাবে সাহিত্যচর্চা করেছেন। আমৃত্যু তিনি সাহিত্যের জন্য কাজ করেছেন।

বাংলা একাডেমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বুলবুল চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। সেখানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

শনিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ছয় মাস আগে তার ক্যানসার ধরা পড়ে।

সংশ্লিষ্ট নিউজ:
বাংলা একাডেমিতে বুলবুল চৌধুরীর মরদেহ
কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২১
ডিএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।