ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বাস্তব জীবনের চিত্রে মঞ্চনাটক ‘দ্বৈত মানব’

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২১
বাস্তব জীবনের চিত্রে মঞ্চনাটক ‘দ্বৈত মানব’ ...

ঢাকা: চন্দ্রকলা থিয়েটারের প্রযোজনায় শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন হলো ভিন্নধর্মী গল্পের নাটক ‘দ্বৈত মানব’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন এইচ আর অনিক।

গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের অষ্টম দিন শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হয় এই নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন।

নাটকে দেখা যায়, একটি সম্পর্কের উত্থান-পতনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে এর কাহিনী। শান্ত ও শিউলির ৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে তৃতীয় পক্ষের আগমনে তাদের সুখের সংসারে ঝড় নেমে আসে। শান্ত পেশায় একজন লেখক। একুশে বই মেলার জন্য প্রকাশকরা উপন্যাস লেখার অর্ডার দেন তাকে। কিন্তু হঠাৎ করে তার লেখা বন্ধ হয়ে যায়। উপন্যাস লেখার প্লট খুজে পায় না সে। পাণ্ডুলিপির জন্য প্রকাশকরা বারবার তাগাদা দিচ্ছে। কিন্তু কোনভাবেই তার কলম থেকে লেখা বের হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতির মধ্যেও শিউলি শান্তর সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে। নানা অভিযোগে জর্জরিত করে শান্তকে। ঝগড়ার কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ইতিহাস থেকে আগমন ঘটে অন্য চরিত্রের। তারা তৃতীয় পক্ষ হয়ে শান্ত-শিউলির সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করে। সেই তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে হিটলার, মীর জাফর এবং ঘসেটি বেগম।

ঘটনাক্রমে শান্ত ও শিউলি ভিলেনদেরকে তাদের নিজ নিজ পক্ষে নিয়ে নেয়। ভিলেনরা শান্ত ও শিউলির  সর্ম্পকের মধ্যে তাদের কুটবুদ্ধির প্রয়োগ করে। নানা ভাবে প্ররোচনা দেয় শান্ত ও শিউলিকে। মাকড়শার জাল বিছায় তারা। সেই ফাঁদে পা দেয় শান্ত ও শিউলি। স্বামী-স্ত্রী থেকে তারা একে অপরের শত্রু হয়ে যায়। অস্তিত্ব সংকট মেটাতে নানা রকমের পদক্ষেপ নেয়। এভাবেই বিচিত্র ঘটনার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায় ‘দ্বৈত মানব’ নাটকের কাহিনী।

নাটকটি সম্পর্কে এর রচয়িতা ও নির্দেশক এইচ আর অনিক বলেন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় সমাজ ও পরিবারে যে ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, সেটিই এই নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। হিটলার-মীরজাফর ও ঘষেটি বেগম চরিত্রগুলো অনেক পুরনো এবং কুখ্যাত হলেও এই চরিত্রের মতো করে এখনো অনেকে আমাদের ব্যক্তি জীবনে ছায়া ফেলে যায়।

নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহমুদুল হাসান মাসুম, এস এম অঙ্গন, এইচ আর অনিক, বাধন, শুভ, নাহিয়ান প্রমুখ।

এদিকে একইসময়ে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নৃত্যনাট্য ‘ব্যাটল অব বাংলাদেশ’ পরিবেশন করে বাংলাদেশ ব্যালে ট্রুপ। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি পরিবেশন করে নাটক ‘রাজনীতির কবি’। অন্যদিকে সন্ধ্যা ৭টায় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘চলো এগিয়ে যাই’ শিরোনামের আবৃত্তি পরিবেশন করে বাচিক সংগঠন মুক্তধারা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র এবং নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’ পরিবেশন করে নাচের দল স্পন্দন।

এর আগে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জাতীয় নাট্যশালার উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পথনাটক ‘রঙ্গপীঠ’ পরিবেশন করে গাজীপুরের মুক্তমঞ্চ, দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে প্রজন্ম কণ্ঠ, দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন উজান ও দলীয়নৃত্য পরিবেশন করে নাচের দল নৃত্যজন। ১২ অক্টোবর শেষ হবে ১২ দিনের এই নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২১
এইচএমএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।