ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

হিজড়া জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখের নাটক ‘শিখণ্ডী কথা’ মঞ্চায়িত

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
হিজড়া জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখের নাটক ‘শিখণ্ডী কথা’ মঞ্চায়িত

ঢাকা: মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় মানবিক নাটক ‘শিখণ্ডী কথা’র ১৭৮তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখ কথামালায় গাঁথা গবেষণালব্ধ নাটক ‘শিখণ্ডী কথা’।

সোমবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় নাটকটির মঞ্চায়ন। নাটকটি রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান। নির্দেশনা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদ হারুন।

নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়, যাকে নিয়ে নাট্য কাহিনী, যার সুখ দুঃখ কথা ফুল হয়ে ফুটে উঠে নটনটীদের অঙ্গে উপাঙ্গে শাখা প্রশাখায়, যার বেদনা গীত হয়, সে এখন মায়ের গর্ভে বাঁকানো ত্বকের ছইয়ের নিচে ছোট ভ্রুণ। এই ভ্রুণ জানেনা কৈশরে সে পরিবার থেকে বিতাড়িত হবে, যৌবনে তার কামনা বাসনা পচবে গলবে নিজের ভেতরে, এক ভয়ানক বেদনায় নিজেকেই নিজে খুন করবার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠবে, জীবন যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে এ ভ্রুণ একদিন ঈশ্বরের মুখোমুখি দাঁড়াবে। এছাড়া সে সমাজের সভ্যজনদের সমবেত করে পরনের কাপড় টুকরো টুকরো করে ছিঁড়বে এই জনমেই।

নাট্যকথার ছোট্ট ভ্রুণ চাঁদ সোনা এক ছেলে শিশু হয়ে জন্মগ্রহণ করে হিজলতলী গ্রামের রমজেদ মোল্লার পরিবারে। তার নাম হয় রতন মোল্লা। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকালে আবিস্কৃত হয় সে অংশত নারী, অংশত পুরুষ। জীবনের সব স্বাভাবিকতা বিনষ্ট হয়ে জন্মের এক ভীষণ যন্ত্রণা সহস্রমুখো দানবের মতো জীবনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে।

এই লিঙ্গ বৈষম্য মানুষের সুখ দুঃখ নিয়েই নাটক- ‘শিখণ্ডী কথা’। তারা নারী না হোক, পুরুষ না হোক একজন স্বাভাবিক মানুষের সম্মান যেন পায়, এই অভিপ্রায় সামনে রেখেই মহাকাল প্রযোজনা ‘শিখণ্ডী কথা’ বলে জানান এর নির্দেশক।

‘শিখণ্ডী কথা’ নাটকের নেপথ্য শিল্পীরা হলেন- পোশাক পরিকল্পনায় ওয়াহিদা মল্লিক, সূচনা সঙ্গীত ইউসুফ হাসান অর্ক, আবহ সঙ্গীত সুলতানা ইয়াসমীন হক ও আব্দুল আলীম, মঞ্চ পরিকল্পনায় তানভীর হাসান ও মু. শফিকুল ইসলাম। আলোক পরিকল্পনায় রফিকুল হক হিমেল, কোরিওগ্রাফী রাজশ্রী রায় এবং রূপসজ্জায় শুভাশীষ দত্ত তন্ময়।

নাটকটির কুশীলব আনন জামান, পলি বিশ্বাস, রিপন রনি, সম্রাট, সুরেলা নাজিম, মো. শাহনেওয়াজ, সৈয়দ ফেরদৌস ইকরাম, কামরুজ্জামান সবুজ, সৈয়দ লুৎফর রহমান, ইকবাল চৌধুরী, বাহার সরকার, ফারুক আহমেদ সেন্টু, বিথুন আহমেদ, সামিউল জীবন, শাহনিয়ার পলিন, রেদোয়ান হোসেন, স্বপ্নীল, শিবলী সরকার, রাসেল আহমেদ, মায়া, সেলিনা আহমেদ ডেইজী, সাথী, সোহেল আহমেদ, তারক দাস, নাবিল হাসান, রাকিব হাসান, কানিজ ফাতেমা লিসা ও মনিরুল আলম কাজল।

এই নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হয় ২০০২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, মহিলা সমিতি মঞ্চে। শততম মঞ্চায়ন হয় ২০১০ সালের ৩ মার্চ জাতীয় নাট্যশালা’র মূল হলে। দেড়শততম মঞ্চায়ন হয় ১৫ নভেম্বর ২০১৪ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এবং ১৭৫তম মঞ্চায়ন হয় জাতীয় নাট্যশালা’র পরিক্ষণ থিয়েটার হলে ২৪ মে, ২০১৯ সালে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫২ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।