ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

৪০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চায় তিন ব্যাংক

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৬
৪০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চায় তিন ব্যাংক

ঢাকা: লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে লিবিয়ান দিনার কিনে বিপাকে পড়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিন তফসিলি ব্যাংক। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ও‌ই মুদ্রার সমপরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এসব মুদ্রা ব্যাংকগুলোর ভল্টে অলস পড়ে আছে। বেশ কয়েকবার বিক্রির উদ্যোগ নিলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকই কেনার আগ্রহ দেখায়নি। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধের সময় লিবিয়া থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত আনা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ৬৯ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৪ লিবিয়ান দিনার কেনে ব্যাংক তিনটি।

বর্তমান বাজার মূল্যে লিবিয়ার দিনারের বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৬ দশমিক ৪৬ টাকা হয়। সে হিসেবে ব্যাংকগুলো অলস পড়ে আছে প্রায় ৩৯ কোটি ৭ লাখ টাকা।

সোনালী ব্যাংকের কাছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৩০ দিনার রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকের ২৬ লাখ ১২ হাজার ২৩ দিন‍ার আর জনতা ব্যাংকের কাছে আছে ২৫ লাখ ২৬ হাজার ৮০১ দিনার।

আরব বসন্তের চূড়ান্ত পর্যায়ে পশ্চিমা জোটের বিমান হামলায় বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি সরকারের পতনের পর এসব দিনার বাজেয়াপ্ত করে পশ্চিমা জোটের সমর্থনপুষ্ট লিবিয়ার কোয়ালিশন সরকার।

সূত্র বলছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকায় লিবিয়ার দূতাবাসেও বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বিপুল পরিমাণ এ অর্থের বিনিময় মূল্য দিতে অসম্মতি প্রকাশ করেছে তারা।

আন্তর্জাতিক বাজারে অবিক্রয়যোগ্য ও লিবিয়া সরকার বিনিময় সংক্রান্ত কোনো দায় না নেওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে সোনালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংক।

জনতা ব্যাংক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হাসান ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, ওই বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী লিবিয়া ফেরত শ্রমিকদের কাছ থেকে এসব ম‍ুদ্রা কেনা হয়। কিন্তু এখন বিক্রি করতে না পেরে ব্যাংকের এ মূলধন আটকে আছে। তাই আমরা এর বিহিত চাচ্ছি।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, অবিক্রিত ম‍ুদ্রাগুলোর বিনিময় মূল্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে মতামত দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের ৩১ জুলাই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক ম‍ুদ্রানীতি বিভাগ।

ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ তহবিল বা অন্য কোনো সুবিধাজনক উৎস থেকে এ ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে।

অনুমোদন পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে সমপরিমাণ অর্থ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংকই। যা পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের দেওয়া লভ্যাংশের সঙ্গে সমন্বয় করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
এসই/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।