ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

৩৩০ কোটি টাকা চায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
৩৩০ কোটি টাকা চায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক

ঢাকা: কার্যক্রম পরিচালনা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য তিন বছরে প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা চায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। নিজেদের আয়ে সব খরচ বহন সম্ভব হচ্ছে না বিধায় প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারের কাছে এই অর্থ চেয়েছে ব্যাংকটি।

বিনিয়োগ, আমানত ও ঋণের সুদ থেকে যে আয় হবে, তার সব মিলিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান ও অন্যান্য খরচ বহনে উপরে উল্লিখিত অংকের অর্থ ঘাটতি থাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে সম্প্রতি চিঠি পাঠিয়ে এই অর্থ চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে প্রথম বছরে ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশ, দ্বিতীয় বছরে অর্ধেক ও তৃতীয় বছরে এক তৃতীয়াংশ চাওয়া হয়েছে।

২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের একটি অনুষ্ঠানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালের ৮ জুলাই জাতীয় সংসদে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আইন পাস হয়। ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’কে স্থায়ী রূপ দিয়ে বিশেষায়িত ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

২০১৬ সালের ৩০ জুন ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মেয়াদ শেষের আগেই ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কার্যক্রম ও ১০০ শাখার উদ্বোধন করেন।

জানা গেছে, ৪শ ৮৫টি শাখা নিয়ে একযোগে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রায় আট হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করতে নিজেদের আয় পর্যাপ্ত হচ্ছে না। কারণ মাত্র ৮ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন ও ব্যাংক পরিচালনা করতে গেলে ব্যাংকের মূলধন ক্ষয় হতে পারে।

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এক হিসাবে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে ব্যাংকটির বিনিয়োগ থেকে আয় হবে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আমানত থেকে ২০ লাখ টাকা ও ঋণ থেকে আয় হবে ৮০ কোটি টাকা। অপরদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ দিতে হবে ১৪৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অফিস পরিচালনায় ব্যয় হবে ৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আমানতকারীদের সুদ দিতে ৪৫ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের হিসাবে ব্যাংকটির ঘাটতি রয়েছে ১শ ৬৫ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদার বলেন, বর্তমান অর্থবছরে ব্যাংক মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ আয় করতে পারবে। তাই খরচের বাকি দুই-তৃতীয়াংশ পরিশোধের জন্য সরকারি বরাদ্দ প্রয়োজন। ব্যাংকের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে প্রথম বছরে সরকারের কাছ থেকে মোট ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশ (১৬৫ কোটি টাকা), দ্বিতীয় বছরে অর্ধেক (১১০ কোটি টাকা) ও তৃতীয় বছরে এক তৃতীয়াংশ (৫৫ কোটি টাকা) বরাদ্দ প্রয়োজন।

পর্ষদ সভায় বর্তমান ও আগামী দুই বছরের আয় ও খরচের পার্থক্য নিরূপণ-ঘাটতির বিষয়টি নির্ধারণ কর‍া হয়। এরপরই অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠান ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

অর্থ চাওয়ার যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক বিপুল জনবল ও সর্বোচ্চ সংখ্যক শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করে না। কিন্তু একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের, যা বর্তমানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কার্যক্রম সারাদেশে বিস্তৃত বিধায় প্রকল্পের অর্জনকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অব্যাহত রাখতে সরকারের কাছ থেকে এই অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন।

জানতে চাইলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
এসই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।