ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

ব্যাংকের দাবি মেনে ক্রেডিট কার্ডের নীতিমালা সংশোধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৭
ব্যাংকের দাবি মেনে ক্রেডিট কার্ডের নীতিমালা সংশোধন

ঢাকা: গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নীতিমালা করলেও ব্যাংকগুলোর আপত্তির মুখে পিছু হটেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ছয়টি ধারা সংশোধন করে ব্যাংকের দাবি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সকল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে।

সংশোধিত নীতিমালায় সুদের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

ফলে ব্যাংকগুলো ভোক্তা ঋণ নয়, অন্য যে কোনো ঋণের সর্বোচ্চ সুদের সঙ্গে ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নির্ধারণের সুযোগ পাবে।

এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা বা দ্বৈত মুদ্রায় সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইস্যু করার বিষয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নীতিমালাটি বাস্তবায়নের সময়সীমাতেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১১ মে জারি হওয়া নীতিমালাটি সংশোধনের পর কার্যকর হবে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে।

জানা গেছে, ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবসার স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু পরিচালনা এবং এ সেবার ঝুঁকিগুলো আরও কার্যকর ও ফলপ্রসূভাবে মোকাবেলা এবং গ্রাহক স্বার্থ রক্ষার্থে ১১ মে ক্রেডিট কার্ড সেবা সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এতে বলা হয়, ভোক্তা ঋণের যে সুদহার রয়েছে, তার চেয়ে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বেশি হতে পারবে ক্রেডিট কার্ডের সুদহার। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ভোক্তা ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ। সেই হিসাবে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ সুদহার হতো ১৭ শতাংশ।

কিন্তু ভোক্তা ঋণের সর্বোচ্চ সুদহারের সঙ্গে এ সেবার সুদহার নির্ধারণের বিষয়ে আপত্তি জানায় বেসরকারি খাতের দ্য সিটি, ব্র্যাক ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। নীতিমালা সংশোধনের কারণে সুদ হার যে পরিমাণ কমানোর আশা করা হয়েছিল তা কমবে না।

এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্রেডিট কার্ডে ঋণ সেবাটি ব্যাংকের অন্যান্য সেবার মতো নয়। জামানতবিহীন ঋণ হওয়ায় এক্ষেত্রে খেলাপির ঝুঁকি অনেক বেশি। কিছু গ্রাহক ক্রেডিট কার্ডে টাকা ঋণ নিয়ে ওই কার্ড আর ব্যবহার করেন না।

ফলে এ সেবার গ্রাহকদের নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করতে হয়। তাছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ক্রেডিট কার্ডে ঋণের সুদহার বেশি। এমন যুক্তি তুলে ধরে ব্যাংকের যে কোনো ঋণের সর্বোচ্চ সুদের সঙ্গে ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নির্ধারণের দাবি জানান তারা।

আগের নীতিমালায় বৈদেশিক মুদ্রায় বা দ্বৈত মুদ্রায় সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইস্যু করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এতে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। তাই সংশোধিত নীতিমালায় এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সংশোধিত নীতিমালায় ক্রেডিট কার্ডের বিল কালেকশনের সময়সীমা বন্ধের দিনে শেষ হলে তা তার গ্রেস পিরিয়ড পরবর্তী কার্যদিবস পর্যন্ত বর্ধিত করার সুবিধা রাখার বিধান করা হয়েছে।

এছাড়া ক্রেডিট কার্ডের অর্থ আদায়ে গ্রাহককে যখন তখন টেলিফোনে বা অসময়ে বিরক্ত না করে উপযুক্ত সময়ে যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছে।

সংশোধিত নীতিমালায় ক্রেডিট কার্ড সেবায় প্রতারণা রোধে গ্রাহক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম-আচার মানার কথাও বলা হয়েছে। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতিটি আউটলেটে (পয়েন্ট অব সেল বা পৌজ) পিন কোর্ড অথবা বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৭
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।