ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

২০ বছরে মার্কেন্টাইল ব্যাংক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৮
২০ বছরে মার্কেন্টাইল ব্যাংক

ঢাকা: আগামী ২ জুন ১৯ বছর পূর্ণ করে ২০ বছরে পা দিচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড। ১৯৯৯ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিলের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ব্যাংকটির। বিগত দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের আর্থ সামাজিকখাতে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে ব্যাংকটি।

এ উপলক্ষে বুধবার (৩০ মে) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কাজী মশিহুর রহমান বলেন, আমরা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের টেশসই উন্নয়নের ঐতিহ্য ধরে রেখেছি।

আমাদের অগ্রগতি হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রিতে। একটি ব্যাংক হাজার বছর বেঁচে থাকে। আমরা সেই বিবেচনায় কাজ করেছি।

ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান এএসএম ফিরোজ আলম বলেন, দু’টি ব্যাংকের কারণে পুঁজিবাজারে ব্যাংক শেয়ারের দাম কমেছে। ব্যাংকের প্রতি মানুষের অনীহা তৈরি হয়েছে। জনগণ মনে করে সব ব্যাংক খারাপ হয়ে গেছে। সবাই আমাদের খারাপ মনে করেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে পরিচালকরা ঋণ নিতে পারেন না। তাই সবার মধ্যে কী করলে এ ব্যাংকের ভালো হবে সেই বিষয়টি কাজ করে।

ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন (হুমায়ুন) বলেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংক মুনাফার পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকের অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, যা ঘটে তা লিখুন। যা ঘটেনি তা লিখলে ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকের পরিচালকরা বলেন, এতোদিন বেসরকারি ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের আমানতের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত জমা রাখতে। এখন সেটা ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। আর ১ শতাংশ সিআরআর (ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ বা ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও) কমানোর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে পড়ে থাকা অলস অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটা জাতির স্বার্থের জন্য করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

একজন পরিচালক ঋণখেলাপি হওয়ার পরও পর্ষদে বহাল আছেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো পরিচালককে ঋণখেলাপির দায়ে অপসারণের নির্দেশ দিলে তা পাওয়ার পরে পর্ষদ সভায় করা হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে তিনি একটি প্রতিবেদনে বিগত বছরে ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন।  

প্রতিবেদনে উল্লখ করা হয়েছে-চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটির ব্যালেন্স দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। মোট আমানত ২১ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা, ঋণ ও অগ্রিম ২০ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালন মুনাফা ৭১১ কোটি টাকা। মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ। শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ২২ দশমিক ৪০ টাকা। শেয়ার প্রতি আয় ০ দশমিক ৮৪ টাকা। পরিচালন কার্যক্রম হতে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ ২ দশমিক ২৯ টাকা। আমানত সুদ ব্যয় হার ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, ঋণের সুদ আয় হার ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ।  

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়- ব্যাংকটি ১২৯টি শাখার মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরে আরও ১০ টি শাখা চালু করার কথা রয়েছে। এটিএম বুথ রয়েছে ১৬২ টি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে বিশ্বের ৬২২ টি ব্যাংকের সঙ্গে। ৩৩ টি দেশি-বিদেশি একচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত অর্থ দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছাতে কাজ করছে। দু’টি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও মার্কেন্টাইল একচেঞ্জ হাউজ ইউকে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ১৩ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা ও আমদানির পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। একই সময়ে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান এম. আমানউল্লাহ, পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম, মোশারফ হোসেন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী ও মতিউল হাসান, মতিউল হাসান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিডব্লিউএম মোর্তজা, মো. জাকির হোসাইন ও আদিল রায়হানসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ০২২৪ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
এসই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।