ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

সোমবার অনুমোদন পাচ্ছে নতুন চার ব্যাংক!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
সোমবার অনুমোদন পাচ্ছে নতুন চার ব্যাংক!

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনুমোদন পেতে যাচ্ছে নতুন আরও চার ব্যাংক। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কয়েকদফা চিঠি চালাচালির পর অবশেষে সোমবার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন এ চারটি ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।

যেসব ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হবে সেগুলো হলো- ‘বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড’, ‘পিপলস ব্যাংক লিমিটেড’ ও ‘সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেড’ ও কমিউনিটি পুলিশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় চারটি ব্যাংক অনুমোদনের এজেন্ডা উত্থাপন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে।

কমিউনিটি ব্যাংকসহ নতুন এ চারটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হলে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬২টি-তে।

পুলিশের উদ্যোগে চালু হতে যাওয়া কমিউনিটি ব্যাংক ছাড়া নতুন তিনটি ব্যাংকের লাইসেন্স দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তবে দেরিতে হলেও এটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে অর্থমন্ত্রীর কয়েক দফা চিঠির জবাব দিয়ে লাইসেন্স না দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকগুলো লাইসেন্স পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত পালন করতে চেয়েছিল তা যথাযথভাবে পালন করছে না। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন উত্থাপন ও এরফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কায় নতুন তিনটি ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া যাচ্ছে না।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পিপলস ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এর উদ্যোক্তা নিউ ইয়র্ক প্রবাসী সন্দ্বীপের এম এ কাশেম। বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের উদ্যোক্তা বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও সিটিজেন ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছেন মোহাম্মদ ইকবাল নামের এক ব্যক্তি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০১৩ সালে লাইসেন্স পাওয়া ১১টি ব্যাংক নিট মুনাফার ১০ শতাংশ সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে (সিএসআর) ব্যয়, মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৫ শতাংশ বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সময় জারি করা নির্দেশনা মোতাবেক কৃষি ও পল্লী ঋণে বিনিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যাত্রা শুরুর ৩ বছরের মধ্যে গণপ্রস্তাব ইস্যু করতে বলা হয়েছিল। তবে কোন ব্যাংকই বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব নির্দেশনা পালন করতে সক্ষম হয়নি। সে জন্য নতুন করে তিনটি ব্যাংকের লাইসেন্স দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো আগ্রহ নেই।

নতুন তিনটি ব্যাংকের লাইসেন্স দিতে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, ২০১৩ সালের অক্টোবরে আমরা ১১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছি। সেই সময়ে আমার ভুলে চূড়ান্ত তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হয়নি পিপলস ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। এর উদ্যোক্তা নিউ ইয়র্ক প্রবাসী সন্দ্বীপের এম এ কাশেম। এ ব্যাংকটির লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নিয়েছি।

এছাড়াও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড’র প্রধান উদ্যোক্তা বেঙ্গল গ্রুপের জসিম উদ্দিন। ভারতের সাবেক রাস্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্ত্রীর নামে নড়াইলে তার পৈতৃক বাড়িতে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সেই হাসপাতালের ব্যয় নির্বাহের জন্য এ ব্যাংকটির সিএসআরের অর্থ ব্যয় করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকও অর্থমন্ত্রীর এ প্রস্তাব নাকচ করে বলেছিল, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ৩১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে দেশে নতুন ব্যাংক স্থাপনের লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের এখতিয়ারভুক্ত। নতুন ব্যাংক স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়েবসাইট ও পত্র পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরখাস্ত আহবান করে এবং দাখিলকৃত আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসৃত প্রথার আলোকে পর্যালোচনা/বিশ্লেষণ পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিষ্পত্তি করা হয়।

এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও বলেছিল, আবেদনপত্র দু’টির বিপরীতে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক গৃহীত কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠবে। যার ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এসই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।