ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

খুলনায় কাঙ্ক্ষিত নতুন টাকা মিলছে না!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৯
খুলনায় কাঙ্ক্ষিত নতুন টাকা মিলছে না! নতুন টাকা।

খুলনা: প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে বেড়ে যায় নতুন টাকার চাহিদা। চাহিদা পূরণে বরাবরের মতো নতুন টাকা বিতরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে নতুন নোট বিনিময় করা হচ্ছে।

রোববার (৪ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া নোট বিনিময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) পর্যন্ত চলবে। প্রতিবছরের মতো এবারও খুলনায় গ্রাহকদের নতুন নোটের চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় এক-চতুর্থাংশ লোকও নতুন নোট পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

গ্রাহকরা বলছেন, গ্রাহকদের সবাই নতুন টাকা পাচ্ছেন না। সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাতেও কচকচে টাকার দেখা মিলছে না। ব্যবস্থাপনা কৌশল ও চাহিদার তুলনায় ছাপানো নতুন টাকা কম হওয়ায় এ সেবা পান অপেক্ষাকৃত প্রভাবশালী গ্রাহকেরাই।

ঈদের খুশি আরও রাঙিয়ে তুলতে ঈদ সেলামির প্রচলন অনেকদিনের। ছোটদের ঈদ আনন্দই যেনো জুড়ে থাকে নতুন টাকার সেলামিতে। আর তাই ঈদ এলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বেড়ে যায় নতুন টাকার চাহিদা। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে এনেছে নতুন টাকা।  

নতুন টাকা নিতে আসা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ঈদের সেলামি মানে নতুন টাকা। ঈদে শিশুরা নতুন টাকা পেলেই খুশি হয়। ওদের খুশি দেখলে ভালো লাগে।

নতুন নোটপ্রত্যাশী ব্যবসায়ী শামীম বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যারা অধীনস্থ তাদের জন্য ঈদে বকশিস দিতে হয়। বকশিস দেওয়া নেওয়া ঈদের আনন্দ যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমনি বন্ধনগুলোকে মজবুত করে। এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে নতুন টাকা। তাই ব্যাংকে না পেলে ফুটপাত থেকে হলেও নতুন টাকা কিনতে হয়।

ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা অফিসের সামনে পুরাতন ব্যবসায়ী ছাড়াও নতুন করে এ ব্যবসায় যোগ হয়েছেন অনেকে। ঈদ বখশিস দিতে লোকজন তাদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছেন নতুন নোট। সকাল থেকে রাত অবধি বিরামহীনভাবে চলছে এ ব্যবসা। সারাবছর সাধারণত নতুন ১শ টাকার একটি বান্ডিল (এক হাজার টাকা) নিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বেশি দিতে হয়। তবে এখন ১২০ থেকে ২০০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, ঈদ মৌসুমে দালালচক্র ব্যাংক থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করে বাইরে চড়া দামে বিক্রি করে।

এখানের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তারা শুধু নতুন টাকা নয়, পুরাতন ও ছেঁড়া টাকার ব্যবসাও করেন। অর্থাৎ কমিশন ভিত্তিতে পুরাতন ও ছেঁড়া টাকা বদলিয়ে দেন। স্বাভাবিক সময়ে নতুন টাকার ব্যবসা তেমন একটা চলে না। শখের বসে অনেকে সংগ্রহে রাখার জন্য নতুন টাকা নিয়ে যান। তবে বেশিরভাগ সময় চলে ভাংতি টাকার ব্যবসা।  

একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ঈদে সেলামির হিসাবে নতুন টাকা পেতে পছন্দ করে ছোট-বড় সবাই। এ কারণে ঈদ এলেই নতুন টাকা বদলে নিতে ব্যাংকে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সবশ্রেণীর মানুষ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, তাদের কাছে যে কেউ আসলে নির্ধারিত পরিমাণ নতুন টাকা সংগ্রহ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সবারই সমান অধিকার।

তবে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের ঈদে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে নতুন টাকা পাইনি বললেই চলে। অথচ প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নতুন টাকা সোনার হরিণ হয়ে ওঠেছে।

স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের খুলনা শাখার সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ব্যাংকার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ মোসলেহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ছোটদের মুখে হাসি ফুটাতে নতুন টাকা নিতে বড়রা ভিড় করছেন ব্যাংকগুলোতে। প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে বেড়ে যায় নতুন টাকার চাহিদা। চাহিদা পূরণে ব্যাংকগুলো বরাবরের মতো এবারও হিমশিম খাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা অফিসের সহকারী পরিচালক মো. নওয়াজ শরীফ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে ১০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট বিতরণ করা হচ্ছে।

রোববার থেকে নতুন নোট সরবরাহ শুরু হয়ে কার্যক্রম শেষ হবে বৃহস্পতিবার। খুলনা অফিসের একটি কাউন্টারের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে ১০ ও ১০০ মূল্যমানের প্রতিটির ০১ প্যাকেট করে মাথাপিছু মোট ১১ হাজার টাকার নতুন নোট সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া খুলনাস্থ চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা (আইএফআইসি ব্যাংক লি., খুলনা শাখা, ঢাকা ব্যাংক লি., খুলনা শাখা, সাউথবাংলা এগ্রি. অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লি., খুলনা শাখা, অগ্রণী ব্যাংক লি. দৌলতপুর শাখা) হতেও উল্লিখিত পরিমাণ নতুন নোট সংগ্রহ করা যাবে। খুলনা অঞ্চলের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে তাদের গ্রাহকদের মধ্যে ঈদুল আজহা উপলক্ষে নতুন নোট সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা,  আগস্ট ০৭, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।