ঢাকা: প্রতি বছরের মতো এবারও বইমেলায় পাঠক চাহিদার শীর্ষে রয়েছে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের অভিধান। অন্য প্রকাশনীর অভিধানেরও চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
মেলার বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট পাঁচটি স্টলে একাডেমির অভিধান বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতাকে এই অভিধানের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
বাংলা একাডেমি স্টলের বিক্রেতারা বলছেন, ‘অভিধান’ প্রয়োজনীয় বই। এ বছর ‘আধুনিক বাংলা অভিধান’ এনেছে বাংলা একাডেমি। সেটাই বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবছরই বিক্রির শীর্ষে থাকে অভিধান, এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
জানা যায়, ১৯৫৮ সালে রচিত ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’র মধ্য দিয়ে অভিধানের ব্যাপকতা শুরু হয়। এরপর গত ষাট বছরের ইতিহাসে শুধু বাংলা একাডেমি থেকেই মোট ২১টি অভিধান প্রকাশিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, কাটতি ভালো হওয়ায় সব ধরনের অভিধান নিয়ে এবারই প্রথম স্বতন্ত্র স্টল বসিয়েছে একাডেমি কর্তৃপক্ষ। বাংলা একাডেমির পাশাপাশি ‘কূটনীতিকোষ, ‘পরিভাষা অভিধান, ‘ঢাকা অভিধান’সহ বেশ কয়েকটি প্রকাশনীও অভিধান বিক্রিতে সাড়া পাচ্ছে।
বাংলা একাডেমির বিক্রয়কেন্দ্রে দায়িত্বরতরা জানান, ইংরেজি থেকে বাংলা ও বাংলা থেকে ইংরেজি অভিধানের বিক্রি বেশি। নতুন আসা আধুনিক বাংলা অভিধানও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, বানান অভিধান, উচ্চারণ অভিধানের বিক্রিও ভালো বলেও জানান তারা।
বাংলা একাডেমির স্টলে অভিধানসহ সব বই বিক্রি হচ্ছে ৩০ শতাংশ ছাড়ে। এই স্টলগুলো ছাড়াও বাংলা একাডেমির নতুন ভবনের নিচে স্থায়ী একটি স্টল রয়েছে। সেখান থেকেও অভিধান কেনা যাচ্ছে। একাডেমির অভিধানের মধ্যে ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, বাংলা থেকে ইংরেজি ও ছোটদের অভিধান বিক্রির শীর্ষে রয়েছে।
তবে একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা ভাষার অভিধান, ছোটদের অভিধান, বাংলা বানান অভিধান, আঞ্চলিক ভাষার অভিধান, বাংলা উচ্চারণ অভিধান, বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান, সমকালীন বাংলা ভাষার অভিধান, সহজ বাংলা অভিধানেরও বেশ চাহিদা রয়েছে।
তবে মেলায় বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত অভিধানের পাশাপাশি অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত কিছু অভিধানও পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে ঐতিহ্য প্রকাশনীতে খন্দকার মাহমুদুল হাসানের ‘ঢাকা অভিধান’, আবদুল মান্নান স্বপনের ‘গালি অভিধান’, অবসর প্রকাশনা সংস্থায় পূরবী বসুর ‘সমপ্রীতির জন্যে শব্দাবলি’, ড. প্রদীপ রায় ও মালবিকা বিশ্বাসের ‘পরিভাষা অভিধান’, দিব্য প্রকাশনীতে ড. মিয়া মোহাম্মদ আদেলের ‘ভাষা কোষ’, শানজিদ অর্ণবের ‘ধর্ম কোষ’, শেখ সাদীর ‘উদ্ভিদ কোষ’, খন্দকার মাহমুদুল হাসানের ‘প্রথম বাংলাদেশ কোষ’, কবির মোহাম্মদ আশরাফ আলমের ‘লোকপ্রশাসন কোষ’, আহমদ পাবলিশিংয়ের ড. হায়াৎ মামুদ ও মুস্তাফা পান্নার ‘কিশোর বাংলা অভিধান’ উল্লেখযোগ্য। ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) প্রকাশ করেছে প্রয়াত বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘যথাশব্দ’ অভিধান।
অভিধানের মধ্যে আছে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা ভাষার অভিধান দাম ২৫০ টাকা, বাংলা একাডেমির ঐতিহাসিক অভিধান ৩০০ টাকা, বাংলা একাডেমি চরিতাভিধান দাম ৪০০ টাকা, বাংলা একাডেমি ছোটদের অভিধান ৩০০ টাকা, বাংলা বানান অভিধান ৪০০ টাকা, বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান ৪০০ টাকা, বাংলা উচ্চারণ অভিধান ৩০০ টাকা, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান ৪০০ টাকা, বাংলা একাডেমি বিবর্তন মূলক বাংলা অভিধান প্রথম খণ্ড ১০০০ টাকা, দ্বিতীয় খণ্ড ও তৃতীয় খণ্ড প্রতিটি ১০০০ টাকা। সমকালীন বাংলা ভাষার অভিধান ১০০ টাকা, সহজ বাংলা অভিধান ১২০ টাকা। সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান ২৫০ টাকা, আরবি ফারসি ও উর্দ্দু শব্দের অভিধান ২০০ টাকা, সংক্ষিপ্ত অভিধান ১৫০ টাকা, বাংলা থেকে ইংরেজি অভিধান ৩২০ টাকা, ইংরেজি থেকে বাংলা অভিধান ৩২০ টাকা।
বাংলা একাডেমির এই অভিধান গুলো কেনা যাবে ৩০ শতাংশ কমিশনে। অভিধানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ইংরেজি থেক বাংলা ও বাংলা থেকে ইংরেজি অভিধান। এই স্টলগুলো ছাড়াও বাংলা একাডেমির নতুন ভবনের নিচে স্থায়ী একটি স্টল রয়েছে সেখান থেকেও অভিধান কেনার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
এডিএ/এমজেএফ/