ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

মাহফুজ পারভেজের দীর্ঘ কবিতা মানব বংশের অলংকার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৭
মাহফুজ পারভেজের দীর্ঘ কবিতা মানব বংশের অলংকার ড. মাহফুজ পারভেজ ও তার বইয়ের কভার। ছবি: সংগৃহীত

একটাই নাম। একটাই কবিতা। একটাই বই। আধুনিক সময়ের প্রথাবিরোধী এই বইটার নাম মানব বংশের অলংকার। বইটির লেখক কবি, গল্পকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ।

একটাই নাম। একটাই কবিতা।

একটাই বই। আধুনিক সময়ের প্রথাবিরোধী এই বইটার নাম মানব বংশের অলংকার। বইটির লেখক কবি, গল্পকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ।

তিনি আন্তরিক যত্নে মানব মনের ভাঙ্গাগড়া থেকে শুরু করে বিশ্ব রাজনীতির জটিল ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও সহজ শব্দ আর ছন্দে তুলে ধরেছেন কবিতাটিতে।

এ গ্রন্থ রচনার পক্ষে তার অভিমত, বাংলা সাহিত্যের পরম্পরায় দীর্ঘ কবিতা রচনার প্রয়াস খুব বেশী লক্ষ্যণীয় না হলেও বিরল নয়। ধ্রুপদী মহাকাব্যের শরীরে দীর্ঘ কাব্যধারার ছাপ রয়েছে; রয়েছে কাহিনী-কাব্য আর গীতি-কবিতার মধ্যেও। আধুনিক কালে এ ধারাটির চর্চা নানা কারণেই আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

তবু কেনো দীর্ঘ কবিতার অপ্রলিত পথে হাঁটলেন ড. মাহফুজ পারভেজ! এ প্রসঙ্গে বইয়ের শেষাংশে সংযুক্ত ভূমিকায় কবির বক্তব্য, কবিতাকে আশ্রয় করে কবিরাই খুঁজে পান লুক্কায়িত অপ্রকট তানের প্রতিধ্বনি; মানবমণ্ডলীর মর্মমূলে প্রবহমান প্রতিবাদ ও ক্ষোভের অন্তঃস্রোত।

আত্মদহনের আয়নায় তাই কবির সাহসী উচ্চারণ-
আমার তরঙ্গ দোলে ছলনার ছলে
আত্মার মৌনতা ভাঙে কূট-কলরবে-

আবার দহনে দহনে যে কবি কেবলই পুড়ছেন তা নয়। ধ্বংসপ্রায় জমিনেও মাথা তুলে দাঁড়াবার প্রত্যাশা তার সহজাত। তাই অকপটে লিখেন-
তবু আমার আঁধার বিনাশী আলোর অন্বেষা;
আমার-তোমার সম্মিলিত অভিলাষ আলোরই অভিমুখী...

এই আশাই হয়তো শেষ পর্যন্ত আরো বেশী আস্থা হয়ে উঠেছে কবির প্রাণে। সেই আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে কবিতায়ও। তিনি লিখেছেন-
অবশেষে আমাদের গ্রাম থাকবেই
থাকবেই প্রাণ
কৃষক ও কৃষি
শ্যাওলা-সবুজের পদ্মপুকুর

চট্টগ্রামের বলাকা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন মামুন হুসাইন। লেখকের আলোকচিত্র তুলেছেন জুলি অরফিরার। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ তে প্রকাশিত বইটির স্বত্ত্ব ভিখারুননেছা রেইনি’র। সাদা অফসেট পেপারে ছাপা ৪০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ১০০ টাকা।

বইটির ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে, মানুষ, সমাজ, বিশ্বাসের অনুসন্ধানে দেশ-কাল-সংস্কৃতিতে নিমগ্ন এক অন্তর্লীন যোগসূত্র নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় এক দশকের সময়সীমায় রচিত এই দীর্ঘ কবিতায়।

কবি পরিচিতি: অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ একজন কবি, গল্পকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। ১৯৬৬ সালের ৮ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের গৌরাঙ্গ বাজারে জন্ম নেওয়া ড. মাহফুজ পারভেজের আদি নিবাস কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বিখ্যাত বি.টি বাড়ি। পিতা ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক. কিশোরগঞ্জ শহরের প্রথম এমবিবিএস ডা. এ এ মাজহারুল হক। মাতা সমাজসেবী নূরজাহান বেগম।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি ফেলোশীপে পিএইচডি তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড লার্নিং এর এলামনাই। আদি পেশা সাংবাদিকতা। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক হিসেব কর্মরত।

আলোচ্য বইটি ছাড়াও আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, রান্নাঘর ভেঙ্গে পড়ে অরণ্যের অন্ধকারে, গন্ধর্বের অভিশাপ নামে আরো তিনটি কাব্যগ্রন্থ আছে তার। পার্টিশানস ও নীল উড়াল নামে নাছে দু’টি উপন্যাস গ্রন্থ। তার গল্পগন্থের নাম ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প।

এছাড়াও আছে ভ্রমণ কাহিনী রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গবেষণা গ্রন্থ বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একবিংশ শতকের বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।