ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে সরগরম গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে সরগরম গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ বইমেলায় চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি/ছবি: কাশেম হারুণ

ঢাকা: প্রকৃতির নিস্তব্ধতা ভেঙে হাতুড়ি পেরেকের টুং-টাং শব্দ। শব্দের তালে তালে তৈরি করা হচ্ছে এক একটি স্টল। কোথাও কোথাও স্টলের অবয়ব ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে- এখন চলছে বুক সেলফ তৈরির কাজ। সেটিতেই আবার রঙের কাজ করছেন কেউ কেউ। নিজ স্টলে বইয়ের পসরাও সাজিয়েছেন অনেকে।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে বাংলা একাডেমি ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এ দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮।

উদ্বোধনের পরপরই মেলাকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। বইপ্রেমী দর্শনার্থীদের কোলাহলে মাসব্যাপী মুখর থাকবে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

এবার প্রায় ৫ লাখ বর্গফুট জায়গায় গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশকে ১২টি চত্বরে বিন্যস্ত করা হয়েছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৩৬টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৮৩টি ইউনিট; মোট ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১৯টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমি-সহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫৫৩৬ বর্গফুট আয়তনের ২৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি স্টলের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি স্টলগুলোর কাজ এখনো চলছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে স্টলের সব কাজ শেষ করেছে নজরুল ইনস্টিটিউট।

প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী মো. রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিবছর একই জায়গায় স্টল বরাদ্দ পাই, যার কারণে সবার আগে কাজ শুরু করি। আমাদের সব বই স্টলে চলে এসেছে। সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ।

চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ এর বিক্রয়কর্মী আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে আমাদের স্টলের সব কাজ শেষ।

এছাড়া প্রেস ইনস্টিটিউট,  শিল্পকলা একাডেমিসহ বেশ কয়েকটি স্টলে বই সাজিয়ে রাখতে দেখা গেছে।

মেলায় ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থার জন্য ১৩৬টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে কাজের দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে এই লিটল ম্যাগাজিন কর্নারটি। এখনো সব স্টল তৈরি হয়নি। প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন শ্রমিক নিয়ে এ অংশটি তৈরির কাজ করছেন মোহাম্মদ দুলাল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা স্টল তৈরির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি মেলা শুরুর আগেই প্রস্তুতি শেষ করতে পারব।

প্রতিবারের মতো গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে সবচেয়ে বেশি স্টল। এখানে প্যাভিলিয়নসহ রয়েছে শিশুচত্বর। এই কর্নারকে শিশুকিশোর বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হচ্ছে। টোনাটুনি প্রকাশনীকে দেখা গেল নান্দনিকভাবে স্টল তৈরি করতে। স্টলটির ওপরে কৃত্রিমভাবে কুড়েঘর তৈরি করে টুনির পিঠা তৈরি করার দৃশ্যটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শিশুদের আকৃষ্ট করার কথা জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মী বাদল বাংলানিউজকে বলেন, রূপকথার টোনাটুনির গল্পের আদলে আমাদের স্টল সাজনোর চেষ্টা করেছি।

এবারের মেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৭ মার্চের স্মৃতিস্তম্ভ দৃশ্যমান রাখা হচ্ছে। উত্তর দিকে  টিনের বেস্টনির পরিবর্তে স্টিলের ফ্রেম দিয়ে এটি প্রস্তুত করছিলেন লুৎফর রহমান রতন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমবারের মতো এটি দৃশ্যমান রাখার কারণে দর্শনার্থীরা কৃত্রিম লেকের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে।

প্যাভেলিয়ন ১৫ নম্বর স্টল বরাদ্দ পেয়েছে অনন্যা প্রকাশনী। প্রতিষ্ঠানটির  বিক্রয়কর্মী ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। মেলা উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাজ শুরু হবে।

তবে উদ্যানের অংশে অধিকাংশ স্টল প্রস্তুতি শেষ করতে পারে নি। তবে অনেকে জানিয়েছেন বাকি সময়ের মধ্যে তাদের কাজ শেষ হবে।

মেলার উভয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ ও বাহিরপথে আর্চওয়ের বসানো হচ্ছে। পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারদের কন্ট্রোল রুম সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে। তবে পর্যবেক্ষণ চৌকি বসানোর কাজ চলছে।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. দিদার হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে গ্রন্থমেলা আয়োজক সমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রস্তুতি চলছে। আজ (বুধবার) রাতের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।

**সংখ্যা নয়, মান বিবেচনায় বই আনতে হবে
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এসকেবি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।