ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

ছুটির দিনে ২৭২টি নতুন বই

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
ছুটির দিনে ২৭২টি নতুন বই মেলার একটি স্টলে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি-শাকিল আহমেদ

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস, সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবার একটি ছুটির দিন। সব মিলিয়ে এই মধ্যভাগে বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শিশু প্রহর দিয়ে মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়। আর সব শ্রেণির পাঠকে মুখরিত হয়ে তা শেষ হয় রাত ৯টায়।

বাংলা একাডেমির হিসেব মতে এদিন নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ২৭২টি।

বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী: শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক’ আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কবি মোহাম্মদ সাদিক এবং সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন।

প্রাবন্ধিক বলেন, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বাস্তব জগৎ শুধু প্রকৃতি নয়, মূলত মানুষকে ঘিরে; সময়ের মধ্যে হাঁটেন তিনি, মানুষময় ভাবনায় মগ্ন থাকেন। এই মানুষের সঙ্গে আসে সমাজের ক্ষত-ক্ষতি-তমসা, মানবতার সংকট ও বিকৃতি। নীরেন্দ্রনাথ সেই কবি যিনি সন্ধ্যায় প্রত্যেককে তার নিজস্ব নারীর কাছে ফিরে আসার অমোঘ সত্য উচ্চারণ করেন। জীবন আর কবিতার মাঝখানে তিনি কোনো ব্যবধান রাখেন না।

বলা হয়েছে, তিনি ছন্দকে চাবুক করে তুলেছেন, অক্ষরবৃত্ত-মাত্রাবৃত্ত-স্বরবৃত্তের বাঁধনে নিজেকে বাঁধেননি। কেননা নীরেন্দ্রনাথ নিত্য খুঁজে গেছেন, ছেঁকে তুলেছেন সেই জীবনকে সেই বাস্তবের মানুষ ও চারপাশকে যা ধারণ করে আছে নিহিত মানবিক সত্তা আর সেই সত্তার কথায়নে তিনি নান্দনিকতা বিনির্মাণ করেছেন। তাঁর দীর্ঘ আয়ু, সৃষ্টিশীলতা আর যেন মৃত্যুও গেঁথে তুলেছে দীর্ঘ আলোর মত হাহাকার আর প্রেমময় বহুস্তরগামিতাকে। এটাই তো কবিতার আরাধ্য।  

আলোচকবৃন্দ বলেন, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বাংলা কবিতাকে দিয়েছেন নতুন দিশা। দৈনন্দিন কথ্য বুলিকে তিনি অনায়াসে যেমন কবিতা করে তোলেন তেমনি জীবন ও জগতের নিগূঢ় দর্শনকে কবিতার মধ্য দিয়ে বাক্সময় করেছেন। পূর্ববাংলার মানুষ নীরেন্দ্রনাথ তার আপন মৃত্তিকাকে কখনও বিস্মৃত হননি। তার কবিতায় এবং অন্যান্য লেখায় বারবার ফিরে এসেছে পূর্ববাংলার মাটি ও মানুষের কথা। তারা বলেন, কবিতাকে একই সঙ্গে শৈল্পিক মানসম্পন্ন এবং সাধারণ মানুষের যোগাযোগক্ষম করে তুলতে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সাধনা বাংলা কবিতার পাঠক চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।  

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন বলেন, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কবিতা বাংলা কবিতার ভুবনে এক বিশেষ মাত্রা-সংযোজক। অতি সাধারণ বক্তব্য-বিষয়কে তিনি প্রায় আটপৌরে ভঙ্গিতে যেভাবে কবিতা করে তুলেছেন তা সত্যি বিস্ময়কর। এছাড়া কবিতা নিয়ে তার গদ্যও পাঠকের কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি ইকবাল আজিজ এবং হারিসুল হক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল এবং রূপা চক্রবর্তী। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল হাসান আব্দুল্লা’র পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঘাসফুল শিশুকিশোর সংগঠন’ এবং আতিকুর রহমান উজ্জ্বলের পরিচালনায় ‘ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্র’-এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দের পরিবেশনা।  

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর: শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মইনুদ্দীন খালেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ফরিদা জামান, নিসার হোসেন এবং মলয় বালা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চিত্রশিল্পী হাশেম খান। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
এইচএমএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।