শনিবার (২ মার্চ) মাসজুড়ে পাঠক-লেখক-প্রকাশকের মিলনস্থলে পরিণত হওয়া বাঙালির প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলা শেষ হলো। যার ফলাফল- সাহিত্য প্রেমীদের আবারও প্রাণের উৎসবে মিলিত হতে এক বছরের অপেক্ষায় রেখে বিদায় নিলো এ মেলা।
বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজনকে নিয়ে রাজধানীবাসী এসেছেন মেলার শেষ দিনেও। স্টলে স্টলে ঘুরে তারা সংগ্রহ করেন পছন্দের বইটিও। এবারের মেলায় বরাবরের মতোই বেচা-কেনার শীর্ষে ছিল কিশোর উপন্যাস। তবে গবেষণাধর্মী বই ও প্রবন্ধেরও চাহিদা ছিল বলে জানালেন প্রকাশকরা।
অন্য যেকোনও বারের তুলনায় বই বিক্রির হিসাবে নতুন রেকর্ড গড়েছে এবারের মেলা। এ বছর মোট বিক্রি হয়েছে ৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার। আর মোট ৪ হাজার ৮৩৪টি নতুন বই এসেছে মেলায়।
আবেগ-উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসায় ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে মেলা প্রাঙ্গণে ছিল প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা বইপ্রেমী মানুষের সরব উপস্থিতি। এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা ছিল ২৮ দিনের পরিবর্তে ছিল ৩০ দিন। আর এ বাড়তি দু'টি দিন যেন পাঠক আর লেখকদের জন্য বাড়তি আনন্দ বয়ে আনে।
লেখক-প্রকাশক-শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ অমর একুশে গ্রন্থমেলার সব আয়োজনকে স্বার্থক করেছে। আর তাই মেলা শেষ হয়ে যাওয়ায় বইপ্রেমী মানুষগুলোর আক্ষেপেরও যেন অন্ত নেই।
বইমেলার শেষদিন। তাইতো বাংলা একাডেমির ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার বেলা ১১টায় খুলে দেওয়া হয় প্রবেশ পথ। আর বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমাতে শুরু করেন বই প্রেমীরা। সেই ভিড় শেষপর্যন্ত পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
শেষদিনে মেলায় ছিল শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার তাড়া। মেলার সময় ফুরিয়ে যাবার পরও স্টলগুলোকে ঘিরে পাঠকদের ভিড় জমেছিল। এরপর থেকেই বইপ্রেমীরা ভিড় জমাতে শুরু করেন মেলার দুই প্রাঙ্গণেই। বিকেলের পর সেই ভিড় পরিণত হয় জনসমুদ্রে। বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজনকে সঙ্গে করে সবাই ঘুরে দেখেছেন শেষদিনের মেলা। ফেরার পথে সঙ্গী করেছেন ব্যাগ ভর্তি নতুন বই।
শেষদিন মেলায় আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মুমু মেহজাবিন জানালেন সেই বিদায় বেদনার কথা। তিনি বলেন, পুরো একমাস উৎসব বিরাজ করছিল এ এলাকাটাতে। বিকেল হলেই বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসে ভিড় করতো মেলায়। কাল থেকে এ মুখরতা থাকবে না সেটা ভাবতেই খারাপ লাগছে।
তবে মন খারাপের সুর থাকলেও আগামী বছর আরো নতুন ভাবনা, নতুন উদ্যোম আর নতুন সংযোজনে মেলা হাজির হবে বলেই জানালেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী। তবে সে পর্যন্ত গুনতে হবে অপেক্ষার প্রহর!
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৯
এইচএমএস/এসএইচ