কিন্তু সেবা দেবে কি! এ হাসপাতালটি যেন নিজেই রোগাক্রান্ত। ১০ জন চিকিৎসকের চাহিদা থাকলেও রয়েছে মাত্র একজন।


হাসপাতালের সংকটের বিষয়ে কথা হয় চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সামছুদ্দিন রাজধনের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাসপাতালটি সেবা দেবে কি! নিজেই রোগাক্রান্ত। হাত-পা ভাঙা কোনো রোগী আসলে তার চিকিৎসা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এক্সরে মেশিনটাও অচল। আবুল খায়ের নামের একজন জানান, জনবলের অভাবে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মৃদুল চন্দ্র দাসকে দিয়েই চলছে জরুরি বিভাগের সেবা।
সরেজমিনে শনিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যার মধ্যে মাত্র ১১জন রোগী ভর্তি আছে। বর্হিবিভাগেও তেমন রোগী নেই। যে কয়জন আছে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় সেবা না পাওয়ায় অনেকেই সরকারি হাসপাতালে আসতে চান না।
সংকর বনিক নামের এক রোগী জানান, ভাঙা পা নিয়ে দু’মাস ধরে এ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। অর্থ সংকটে দ্বীপের বাইরে চট্টগ্রাম জেলা শহরে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার উপায়ও নেই তার।
ছুকুমিয়া নামের আরেকজন জানান, সারাদিনে কোনো রকমে একবার ডাক্তারের দেখা মিললেও টাকা ছাড়া মিলছে না ওষু্ধ। হাসপাতালের টয়লেটগুলোর অবস্থাও নাজুক। পূরুষ ও নারী কেবিনের টয়লেটগুলো কবে পরিষ্কার করা হয়েছে তার কোনো হদিস নেই।
রোগীরা জানান, হাসপাতালে যেসব ডাক্তার আছেন তারা হাসপাতালে সেবার দেওয়ার চেয়ে চেম্বার ও বেসসরকারি হাসপাতালই ব্যস্ত থাকেন। এতে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়া যায়। বেসরকারি সন্দ্বীপ প্রাইভেট হাসপাতালে গেলেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে প্রায় তিনগুন বেশি রোগী সেবা নিচ্ছেন। ওই হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারও রয়েছে। সরকারি হাসাপাতালে সেবা নিতে আসা প্রায় সব প্রসূতিকেই শেষ পর্যন্ত যেতে হয় ওই হাসপাতালে।
উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কথা হয় স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস কামাল বাবুর সঙ্গে। তিনি জানান, উপজেলার হারামীয়া ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে লোকবল এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। হরিশপুরে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের অবস্থাও একই। এই হাসপাতালগুলোর নামে আছে কাজে নেই।
চিকিৎসকের অবহেলা ও সমস্যার ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল করিম জানান, চিকিৎসকদের অবহলোর বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। সত্যি বলতে জনবল, যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামোগত অভাবেই স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত হচ্ছে। সেবা বাড়াতে হলে হাসপাতাল ভবন, চিকিৎসকের বাস ভবন, সীমানা প্রাচীর, কনসালটেন্ট, সার্জারি, গাইরি ও নিরাপদ প্রসূতি সেবা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন বলেও জানান ফজলুল করিম।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এসএইচডি/ওএইচ/