ঢাকা: বিশ্বমঞ্চের ৩৩তম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করা টাইগাররা ইংলিশদের সামনে ২৭৬ রানের টার্গেট দিয়েছে। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ভর করে এ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পান মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। আর তৃতীয় শতকের অপেক্ষায় থেকে মুশফিক ফেরেন ৮৯ রান করে। তবে, দু’জন মিলে ১৪১ রানের বড় জুটি গড়েন।
বিশ্বকাপ স্বপ্ন পূরণে আর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে ইংলিশ বধে আগে ব্যাটিং পাওয়া টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে মাঠে আসেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল এবং এনামুল হক বিজয়ের বদলি হিসেবে খেলতে নামা ইমরুল কায়েস।
তবে, জেমস অ্যান্ডারসনের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেটের পিছনে তৃতীয় স্লিপে দাঁড়ানো ক্রিস জর্ডানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ইমরুল কায়েস। আউট হওয়ার আগে তিনি মাত্র ২ রান করেন।
প্রথম ওভারে ইমরুল কায়েসের উইকেট হারানো বাংলাদেশের আরেক ওপেনার তামিম ইকবালও দ্রুতই বিদায় নেন। একবার জীবন ফিরে পেয়েও সে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন আগের ম্যাচের ইনিংস সর্বোচ্চ ৯৫ রান করা তামিম। জেমস অ্যান্ডারসনের করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো জো রুটের তালুবন্দি হন তামিম (২ রান)।
দলীয় ৮ রানের মাথায় দুই ওপেনারকে হারিয়ে সাময়িক বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবে, বিপর্যয় কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করে রিয়াদ-সৌম্য জুটি। এ জুটি থেকে তারা আরও ৮৬ রান সংগ্রহ করেন। ২১তম ওভারে জর্ডানের বলে উইকেটের পিছনে জস বাটলারের তালুবন্দি হন সৌম্য সরকার। আউট হওয়ার আগে তিনি ৫২ বলে ৫টি চার আর একটি ছয়ে করেন ৪০ রান।
পরের ওভারে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ফেরান মঈন আলী। মঈনের ঘূর্ণিতে জো রুটের তালুবন্দি হন সাকিব (২ রান)।
দলীয় ৯৯ রানের মাথায় সাকিব বিদায় নিলে মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। এ দু’জন মিলে গড়েন ১৪১ রানের জুটি। রিয়াদ ১৩৮ বলে ১০৩ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন। এর আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাঁকিয়ে আর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস সর্বোচ্চ রান করেন সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা ডানহাতি ব্যাটসম্যান মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বমঞ্চে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবেও নাম লেখান। রিয়াদের ইনিংসে ছিল ৭টি চার আর দুটি ছক্কার মার।
ইনিংসের ৪৮তম ওভারে ব্রডের বলে জর্ডানের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে মুশফিক খেলেন ৮৯ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস। তার খেলা ৭৭ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার আর একটি ছক্কা। আর শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে সাব্বির রহমান করেন ১৪ রান।
পাওয়ার প্লে’র দশ ওভারে বাংলাদেশ দুই ওপেনারকে হারিয়ে তোলে ৩২ রান। ২০ ওভার শেষে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে টাইগাররা তোলে ৯৩ রান। দলীয় শতক আসে ১৩৬ বলে। ৩০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে টাইগাররা তোলে ১৩৯ রান। আর ৪০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে টাইগাররা তোলে ১৯৭ রান।
এর আগে চলতি বিশ্বকাপের ৩৩তম ম্যাচে টস জিতে টাইগারদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান।
অ্যাডিলেড ওভালে উভয় দলের জন্যই হবে বাঁচা-মরার লড়াই। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিতে পারলেই সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যাবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেওয়ার মঞ্চ প্রস্তুত হয়ে যাবে ইংলিশদের।
বাংলাদেশের জন্য এ ম্যাচের পরও সুযোগ হিসেবে থাকছে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। তবে ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড দলের এ ম্যাচ জয়ের কোনো বিকল্প নেই।
২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর সুখস্মৃতি রয়েছে বাংলাদেশের। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টাইগাররা ইংলিশদের দুই উইকেটে হারিয়েছিল। দুই দলের মোট দেখা হয়েছে ১৫ বার, এর মধ্যে বাংলাদেশের জয় দুই ম্যাচে। বাকি সবগুলো ম্যাচে জয় পেয়েছে ইংলিশরা। তবে, বাংলাদেশের জন্য আশার কথা, শেষ তিন বারের দেখায় টাইগারদের জয় দু’টিতে।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি।
ইংল্যান্ড দল: ইয়ান বেল, মঈন আলী, অ্যালেক্স হ্যালস, জো রুট, ইয়ন মরগান (অধিনায়ক), জেমস টেইলর, জস বাটলার, ক্রিস উকস, ক্রিস জর্ডান, স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, ০৯ মার্চ ২০১৫
** সেঞ্চুরিয়ান রিয়াদ ফিরলেও অপেক্ষায় মুশফিক
** ক্যারিয়ার সেরা রান নিয়ে খেলছেন রিয়াদ
** বড় জুটির চেষ্টায় রিয়াদ-মুশফিক
** টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** ফিরলেন সৌম্য, ক্রিজে সাকিব
** বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্টায় টাইগাররা
** সতর্ক ব্যাটিং রিয়াদ-সৌম্যর
** অ্যান্ডারসনের আঘাতে সাজঘরে দুই ওপেনার
** ব্যাটিংয়ে তামিম-ইমরুল
** ইংলিশ বধে ব্যাটিংয়ে টাইগাররা