ঢাকা: টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮১ রান তুলেছে দ. আফ্রিকা। ফাফ ডু প্লেসিস, ডি ভিলিয়ার্স, ডেভিড মিলার আর রিলে রুশোর ব্যাটে ভর করে প্রোটিয়ারা এ রান সংগ্রহ করে।
বৃষ্টির কারণে ৫০ ওভারের ম্যাচটি কমিয়ে ৪৩ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চের ফাইনালে উঠতে হলে কিউইদের করতে হবে ৪৩ ওভার থেকে ২৯৮ রান (ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে)।
অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে টস জিতে ব্যাটিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান হাশিম আমলার ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি কিইউ ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে সেই আমালাকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে পাঠিয়ে দায় মেটান তিনি। আমলা আউট হওয়ার আগে করেন ১০ রান। ইনিংসের দ্বিতীয় ও ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভারেও দুবার স্লিপে ক্যাচ মিস করেন নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডাররা।
দলীয় ৩১ রানের মাথায় আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি কক ট্রেন্ট বোল্টের দ্বিতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন। টিম সাউদির তালুবন্দি হওয়ার আগে ডি কক করেন ১৪ রান।
দলীয় ৩১ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ব্যাটিং ক্রিজে ফাফ ডু প্লেসিস এবং রিলে রুশো মিলে ৮৩ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন। দলীয় ২৭তম ইনিংসে কোরি অ্যান্ডারসনের বলে গাপটিলের হাতে ধরা পড়েন ৩৯ রান করা রুশো। এক হাতে অসাধারণ ক্যাচটি লুফে নেন গাপটিল।
ম্যাচের ৩৮তম ওভারে বৃষ্টি হানা দিলে বন্ধ হয়ে যায় প্রথম সেমিফাইনালের ম্যাচ। বৃষ্টির পর আবারো মাঠে বল গড়ায়। তবে, ম্যাচ অফিসিয়ালদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাচটি কমিয়ে ৪৩ ওভার করা হয়।
ম্যাচের ৩৯তম ওভারে ভিলিয়ার্স আর ডু প্লেসিসের ৭৩ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়ার পর সাজঘরে ফেরেন ডু প্লেসিস। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৫তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে অ্যান্ডারসনের বলে উইকেটের পিছনে ধরা পড়ার আগে ১০৭ বলে ৭টি চার আর একটি ছয়ে ডু প্লেসিস ৮২ রান করেন।
প্রোটিয়াদের হয়ে দলপতি ডি ভিলিয়ার্স করেন অপরাজিত ৬৫ রান। ৪৫ বলের ইনিংসে ভিলিয়ার্স ৮টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান। আর শেষ দিকে ব্যাটিং ক্রিজে আসা ডেভিড মিলার মাত্র ১৮ বলে ৪৯ রান করে অ্যান্ডারসনের বলে উইকেটের পিছনে লুক রঞ্চির গ্লাভসবন্দি হন। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চারের পাশাপাশি ৩টি ছয়।
নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা দু’দল মিলে নয় বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেললেও একবারও ফাইনালে ওঠা হয়নি কোনো দলেরই। সেমির বাধা টপকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চে পা রাখতে যাচ্ছে এ দুই দলের কোনো একটি।
দুই দলই দাপটের সঙ্গে কোয়ার্টারের প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে শেষ চারে স্থান করে নেয়। বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি শ্রীলংকাকে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারায় এবি ডি ভিলিয়ার্সের দল। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪৩ রানে হারিয়ে দাপটের সঙ্গে সেমির টিকিট নিশ্চিত করে ব্ল্যাকক্যাপসরা।
এর আগে, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে ক্রিকেটে ৬১ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ২০টিতে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। আর ৩৬ ম্যাচে জয় দক্ষিণ আফ্রিকার। ফলাফল আসেনি পাঁচটি ম্যাচে।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (অধিনায়ক), কেন উইলিয়ামসন, রস টেইলর, গ্র্যান্ট ইলিয়ট, কোরি অ্যান্ডারসন, লুক রঞ্চি (উইকেটরক্ষক), ড্যানিয়েল ভেট্টরি, ম্যাট হেনরি, টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), ফাফ ডু প্লেসিস, এবি ডি ভিলিয়ার্স (অধিনায়ক), রিলে রুশো, ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনি, ডেল স্টেইন, ভারনন ফিল্যান্ডার, মরনে মরকেল ও ইমরান তাহির।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, ২৪ মার্চ ২০১৫