ঢাকা: পুরো ক্রিকেট বিশ্বই তাকিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের দিকে। তাসমান সাগরের দুই প্রতিবেশি দেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ফাইনালিস্ট বলেই হয়তো বাড়তি উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।
রোববার (২৯ মার্চ ) মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের ফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় ম্যাচটি শুরু হবে। এ ম্যাচকে ঘিরে ক্রিকেট ভক্তদের আগ্রহের শেষ নেই। চলুন জেনে নিই ফাইনাল ম্যাচের ১০টি বিশেষ দিক।
১. ২০১১ বিশ্বকাপের পর এই আসরের ফাইনালেও মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকরা। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
২. ১৯৮৭ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম এশিয়ার কোনো দল বিশ্বকাপের ফাইনালে নেই। ওই আসরে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। ১৯৯২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ছয়টি বিশ্বকাপে এশিয়ার একটি দল হলেও ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এর মধ্যে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভারত একবার করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়।
৩. দ্বিতীয়বারের মতো মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের লর্ডসে সর্বোচ্চ চারবার (১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩ ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপ) ফাইনাল ম্যাচ হয়েছে। কোলকাতার ইডেন গার্ডেনস (১৯৮৭), লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম (১৯৯৬), জোয়ানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স (২০০৩), বার্বাডোসের কেনসিংটন ওভাল (২০০৭) ও মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে (২০১১) স্টেডিয়ামে একবার করে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
৪. কালকের ফাইনাল ম্যাচটি তারকা অলরাউন্ডার ডেনিয়েল ভেট্টোরির বিদায়ী ওয়ানডে ম্যাচও হতে পারে। তাইতো নিউজিল্যান্ডের সকল ক্রিকেটারই বলছেন, ভেট্টোরির জন্য হলেও নিজেদের সেরাটা দিয়ে শিরোপা জিততে হবে। অপরদিকে, অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক তো ঘোষণা দিয়েই জানালেন, বিশ্বকাপ ফাইনালই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ ওডিআই ম্যাচ।
৫. ১৯৯২ বিশ্বোপের ফাইনালও হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। সেবার পাকিস্তানের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। আয়োজকদের মধ্যে ভারতই একমাত্র দল যারা ঘরের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়। সহ-আয়োজক হিসেবে ১৯৯৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।
৬. মাইকেল ক্লার্ক ও শেন ওয়াটসন অজিদের হয়ে ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছিলেন।
৭. কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল আর ১০ রান করলেই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান স্কোরার হয়ে যাবেন। সাত ম্যাচে ৫৪১ রান করে শীর্ষে আছেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারা। এক ম্যাচ বেশি খেলা গাপটিল করেছেন ৫৩২ রান।
৮. এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছুঁতে ট্রেন্ট বোল্টের দরকার পাঁচ উইকেট। আর মিচেল স্টার্কের চাই ছয় উইকেট। ২০০৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি বোলার ম্যাকগ্রা একাই নিয়েছিলেন ২৬ উইকেট। এই আসরে কিউই পেসার বোল্ট ২১টি ও অজি পেসার স্টার্ক ২০টি উইকেট লাভ করেন।
৯. ১৯৯৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম অপরাজিত দল হিসেবে প্রথমবার ফাইনালে উঠলো নিউজিল্যান্ড। এর আগে ছয়বার সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে অপরাজিত থেকে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
১০. মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অপরাজেয় দল হিসেবে মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্বের ছয় ম্যাচসহ কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল সবগুলো ম্যাচই নিজেদের মাঠে খেলে জয় পায় কিউইরা।
বিশ্বজুড়ে একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে, কিউইরা কি প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে, নাকি আরেকটি বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুলবে অজিরা?
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৫