ঢাকা: টসে জিতে যে আশায় প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড দলপতি ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, সে আশা গুড়েবালি হয়ে গেছে। মাত্র ৪৫ ওভারেই ১৮৩ রানে গুটিয়ে গেছে ব্ল্যাকক্যাপসদের ইনিংস।
নিউজিল্যান্ডের এ সংগ্রহে শিরোপা জিততে অস্ট্রেলিয়ানদের করতে হবে পুরো ৫০ ওভার খেলে মাত্র ১৮৪ রান।
বাংলাদেশ সময় রোববার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরু হওয়া অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার শিরোপা জয়ের মহারণে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক ম্যাককালাম।
কিন্তু বড় সংগ্রহের আশায় তিনি সে সিদ্ধান্ত নিলেও তা যেন গুঁড়েবালি হয়ে পড়ে। শুরুতেই শূন্য রানে ফিরে যান ড্যাশিং ওপেনার ম্যাককালাম। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই দলীয় এক রানের মাথায় সরাসরি তার স্ট্যাম্প উড়িয়ে সাজঘরের পথ ধরিয়ে দেন মিচেল স্টার্ক।
তার বিদায়ে নামেন কেন উইলিয়ামসন। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে মিলেই উইলিয়ামসন ইনিংস মেরামতের চেষ্টা চালান। কিন্তু গাপটিলও যেন খেই হারিয়ে ফেলেন। অজি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের করা ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্ট্যাম্পের বেল পড়ে যায় তার। সাজঘরে ফেরার জন্য ব্যাট-প্যাড গোছানোর আগে গাপটিল ৩৪ বলে করেন মাত্র ১৫ রান। দলীয় সংগ্রহ তখন ৩৩ রান।
গাপটিল ইনিংসের সমাপ্তির পর মাঠে নামেন রস টেইলর। তবে, টেইলরের সঙ্গে বোঝাপড়া শুরু করার আগেই সাজঘরের পথ ধরেন উইলিয়ামসন। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে মিচেল জনসনের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে বসেন উইলিয়ামসন। সাজঘরে ফেরার আগে উইলিয়ামসন করেন ৩৩ বলে ১২ রান।
উইলিয়ামসন সাজঘরে ফিরলে মাঠে নামেন সেমিফাইনালের জয়ের নায়ক গ্র্যান্ট ইলিয়ট। রস টেইলরকে সঙ্গে নিয়ে উইলিয়ামসন গড়েন শতাধিক রানের পার্টনারশিপ। এ দু’জনের জুটিতে ১১১ রান যোগ হওয়ার সুবাদে কিউইরা লড়াকু সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে থাকে।
সেই স্বপ্নের পুঁজি যোগাতে ঘনিয়ে আসে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’র সময়ও। কিন্তু এই ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’টাই যে ‘কাল’ হবে কে জানতো! পাওয়ার প্লে’র প্রথম ওভারের প্রথম বলেই একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকা রস টেইলরকে সাজঘরের পথ ধরান জেমস ফকনার। টেইলর উইকেটকিপার ব্র্যাড হাডিনের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ৭২ বলে মূল্যবান ৪০ রান।
তিনি সাজঘরে ফিরলে মাঠে নামেন অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসন। কিন্তু হতাশ করেন কোরি। পাওয়ার প্লে’র তৃতীয় বলেই শূন্য রানে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। তারপর খেলতে নামেন উইকেটকিপার লুক রঞ্চি। কিন্তু বরাবরের মতো ফাইনালেও খালি হাতে ফিরতে হয় তাকেও। মিচেল স্টার্কের করা পাওয়ার প্লে’র দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লিপে দাঁড়ানো মাইকেল ক্লার্কের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রঞ্চি। স্বীকৃতি ব্যাটসম্যান হিসাবে রঞ্চি যখন বিদায় নেন তখন দলীয় সংগ্রহ ১৫১।
রঞ্চির উইকেটের পতনের পর খেলতে নামেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। ভেট্টোরিকে নিয়ে ইলিয়ট আরেকটি পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করলেও তাতে বাধ সাধেন মিচেল জনসন। ৪১তম ওভারের শেষ বলে ভেট্টোরিকে ৯ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরান তিনি। ভেট্টোরির বিদায়ে যেন মুষড়ে পড়েন ইলিয়ট। ফকনারের করা ৪২তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১৭১ রানের মাথায় হাডিনকে ক্যাচ দিয়ে ফেলেন তিনি। ব্যাট-প্যাড গোছানোর আগে ইলিয়ট খেলেন ৮২ বলে ৮৩ রানের ঝলমলে ইনিংস।
ব্যস, ইলিয়টের বিদায়েই যেন সবশেষ কিউইদের। তার আউট হওয়ার পর আর মাত্র ১২ রান যোগ করতেই ৪৫ ওভারে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।
ফকনার-জনসনের তিন ও স্টার্কের দুই উইকেট ছাড়াও এক উইকেট নিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫
** কিউইদের ইলিয়ট ‘ডানা’ ভাঙলেন ফকনার
** পাওয়ার প্লে’র শুরুতেই সাজঘরে টেইলর-কোরি-রঞ্চি
** টেইলর-ইলিয়টের ব্যাটে লড়াকু সংগ্রহের ইঙ্গিত
** টেইলর-ইলিয়টের ব্যাটে এগোচ্ছে কিউইরা
** সতর্ক ব্যাটিং টেইলর-ইলিয়টের
** সাজঘরে ফেরার মিছিলে গাপটিল-উইলিয়ামসনও
** ম্যাককালামের পর সাজঘরে গাপটিলও
** ধকল সামলাচ্ছেন গাপটিল-উইলিয়ামসন
** প্রথম ওভারেই সাজঘরে ম্যাককালাম
** ম্যাককালাম-গাপটিল জুটিতে কিউইদের সূচনা
** শিরোপা জিততে ব্যাটিং নিয়েছে কিউইরা
** ছয় সপ্তাহের ক্রিকেটযুদ্ধের ফয়সালা মেলবোর্নে