মিরপুর থেকে: পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ তে জয় পেতে টাইগারদের দরকার ২৫১ রান। বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪৯ ওভারেই গুটিয়ে যায় সফরকারী পাকিস্তান।
তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিক হিসেবে খেলতে নামে দুরন্ত বাংলাদেশ। এ ম্যাচে টস জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলি আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
লাল-সবুজের জার্সিধারী টাইগারদের হয়ে বোলিং সূচনা করতে আসেন দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আর পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন দলপতি আজহার আলি এবং সামি আসলাম। প্রথম ওভার থেকে পাক ওপেনাররা তোলেন মাত্র তিন রান।
পাকিস্তানি অধিনায়ক আজাহার আলীর সঙ্গে সমান তালে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছিলেন একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া সামি আসলাম। তবে ১৮তম ওভারের শেষ বলে নাসিরের বলে উইকেটের পিছনে মুশফিকের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন সামি আসলাম। ৫০ বলে ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরার আগে সাতটি বাউন্ডারি মারেন সামি।
২২তম ওভারে বোলিংয়ে এসে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা মোহাম্মদ হাফিজকে ফেরান আরাফাত সানি। বোলিং নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন হাফিজ। কিন্তু সেই ফুরফুরে ভাব বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি সানি। মাত্র ৪ রান করে ফেরার আগে সানির বলে বোল্ড হন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান। ডানহাতি হাফিজ তিন ম্যাচে করলেন মাত্র ৮ রান(০, ৪ ও ৪ রান)।
শেষ ম্যাচে যেকোনো মূল্যেই জয় চায় পাকিস্তান। আর সে লক্ষ্যেই দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের দলপতি আজহার আলি। জাতীয় দলের হয়ে টেস্টে ৭টি শতক আর ১৮টি অর্ধশতকের মালিক হলেও ওয়ানডেতে প্রথম শতকের দেখা পেলেন এ ম্যাচে। তবে, শতক হাঁকানোর পরই ব্যক্তিগত ১০১ রান করে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আজহার। আউট হওয়ার আগে তিনি ১১২ বলে দশটি চার মারেন।
১১১ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাঁকানো আজহারকে সঙ্গ দেন চার নম্বরে নামা হারিস সোহেল। এ দু’জন মিলে স্কোরবোর্ডে আরও ৯৮ রান যোগ করেন।
সাকিবের পর বোলিং আক্রমণে এসে মাশরাফি বিদায় করেন হারিস সোহেলকে। মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে সোহেল করেন ৫৩ রান। এরপর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের আরেকটি আঘাতে বিদায় নেন রিজওয়ান আহমেদ। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে রিজওয়ানকে ফেরান সাকিব। এর আগে তিনি আজহারকে বিদায় করেন।
এখানেই থেমে থাকেনি উইকেট ভাগাভাগির গল্প। আবারো আক্রমণে এসে মাশরাফি ফেরান ফাওয়াদ আলমকে। নাসিরের তালুবন্দি হওয়ার আগে ফাওয়াদ করেন মাত্র ৪ রান।
সাকিব আর মাশরাফির আগুন বোলিংয়ের পর রুবেল হোসেন এসে ফেরান ওয়াহাব রিয়াজকে। এরপর রান আউটে কাঁটা পড়েন উমর গুল। নিজের পরের ওভারে সাদ নাসিমকে তাসকিনের তালুবন্দি করে ফেরান রুবেল। আউট হওয়ার আগে তিনি ২২ রান করেন।
৪৯তম ওভারে আক্রমণে এসে আরাফাত সানি বোল্ড করেন জুনায়েদ খানকে।
পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভার থেকে পাকিস্তানের দুই ওপেনার তুলে নেন ৫৮ রান। ২০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেট হারিয়ে ৯৯ রান। ৩০ ওভার থেকে পাকিস্তান দুই উইকেট হারিয়ে তোলে ১৫০ রান। ৪০ ওভার শেষে এ সংগ্রহ দাঁড়ায় চার উইকেটে ২১১ রান।
মাশরাফি নির্ধারিত ওভার শেষে ৪৪ রান দিয়েছেন আর সাকিব দিয়েছে ৩৫ রান। দু’জনই দুটি করে উইকেট তুলে নেন। এছাড়া রুবেল ও আরাফাত সানিও দুটি করে উইকেট তুলে নেন।
ইতোমধ্যে ২-০’তে জয় নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। ১৬ বছরের হারের বৃত্ত ভেঙে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে নতুন ইতিহাসের সূচনা করে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচে ৭৯ রানের জয়ের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সাত উইকেটে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেয় মাশরাফি বাহিনী, সেটিও আবার ৭১ বল হাতে রেখে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ২২ এপ্রিল ২০১৫
এমআর
** যাওয়া-আসার মিছিলে পাক ক্রিকেটাররা
** সাকিব-মাশরাফির উইকেট ভাগাভাগি
** সাকিবের আঘাতে রিজওয়ানের বিদায়
** সাকিবে বধ আজহার, মাশরাফি ফেরালেন সোহেলকে
** অধিনায়ক আজহারের প্রথম শতক
** পাকিস্তানকে এগিয়ে নিচ্ছেন আজহার-সোহেল
** জুটি ভাঙার চেষ্টায় টাইগাররা
** এবার সানি ফেরালেন হাফিজকে
** জুটি ভাঙলেন নাসির
** পাওয়ার প্লে’তে পাকদের ৫৮ রান
** সতর্ক শুরু পাকিস্তানের
** ফিল্ডিংয়ে নেমেছে টাইগাররা
** ‘বাংলাওয়াশ’ করতে ফিল্ডিংয়ে টাইগাররা