ঢাকা: সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে প্রথম ওয়ানডেতে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘এবারের সিরিজে আমরাই ফেভারিট। ’ টিপ্পনি কেটে পাকিস্তানের সাবেক ও গ্রেট ক্রিকেটারসহ দলের বর্তমান কোচিং স্টাফরাও বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ যদি নিজেদের ফেভারিট বলে মনে করে, আমাদের কিছুই বলার নেই।
তাদের টিপ্পনির আর হাসি-তামাশার জবাব মাঠেই দিয়েছিল টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডেতে ৭৯ রানে হারিয়ে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দিয়েছিল, কেন তারা ফেভারিট। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা মাঠে নামার আগে বলেছিলেন, সিরিজ জিততে আমরা মাঠে নামবো। ঠিকই দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারীদের ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগার বাহিনী।
আর তৃতীয় ওয়ানডের আগে টাইগাররা হুঙ্কার দিয়েছিল, এখানেই থেমে যেতে চান না তারা। ফলশ্রুতিতে ৮ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ৩-০ জিতে নেয় মাশরাফি বাহিনী। ‘বাংলাওয়াশ’ উপহার দিয়ে পাকিস্তানের লজ্জার বোঝা আরও বাড়িয়ে দেয় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
সফরের একমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলতে পাকিস্তান থেকে উড়ে আসেন টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। এসেই সফরকারী ক্রিকেটারদের আগলে রেখে আফ্রিদি মাঠে নামার আগে বলেছিলেন, পাকিস্তানের ওয়ানডে দলটির চেয়েও টি-টোয়েন্টির দলটি বেশ শক্তিশালী।
তাদের সেই শক্তিমত্তাকে ধূলোর সাথে মিশিয়ে দিয়ে ২২ বল হাতে রেখে আর মাত্র তিনটি উইকেট হারিয়ে টাইগাররা একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও জয় ছিনিয়ে নেয়।
টি-টোয়েন্টিতে জয়ের আনন্দে মাটিতেই পা রেখেছেন মাশরাফি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আশার কথা শুনিয়েছেন টেস্টে ভালো করার।
মাশরাফি জয়ের আগে নাচিয়েছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আর জয়ের আনন্দে নেচেছেন নিজের সৈন্যদের নিয়ে। ম্যাচ কাভার দিতে যাওয়া ফটোগ্রাফারদের সামনে রেখে ছবিও তুলেছেন দলের সতীর্থদের নিয়ে। বিশ্বমঞ্চে তাসকিনের সঙ্গে যেভাবে উইকেট পাওয়ার আনন্দ উৎযাপন করেছিলেন টাইগার দলপতি ঢাকার মাঠেও ঠিক একই ভাবে উৎযাপন করেন টাইগার স্টাইলের সেই আনন্দ। সেই তাসকিন, সেই মাশরাফি।
ঠিক বিশ্বকাপে যেভাবে মাশরাফির সঙ্গে বুক মেলাতে গিয়ে তাসকিনের পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছিল পুরো ক্রিকেট বিশ্ব, ঢাকার মাঠেও দর্শকরা দেখেছে একই দৃশ্য। এখানেও বুক মেলাতে গিয়ে পড়ে যান পেস তারকা তাসকিন।
এখানেই শেষ নয়, ম্যাচ শেষে যখন দর্শকরা তৃপ্তি নিয়ে স্টেডিয়াম ত্যাগ করছিলেন, সে সময় মাঠে শুরু হয় তাসকিনের নাচ। তার সঙ্গে তাল মেলান আরও ক’জন ক্রিকেটার।
রুবেলকে পাওয়া যায় টি-টোয়েন্টির চমক মুস্তাফিজকে নিয়ে মাতামাতি করতে। মাশরাফিকে পাওয়া যায় মাঠের কর্তব্যরত পরিচর্যাকারীদের সাথে হাত মেলানো অবস্থায়। এর আগে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাশরাফিকে বুকে টেনে নেন।
নাচের মঞ্চে নাসিরও ছিলেন, তার আগেই নাসির-মুশফিকের মধ্যে একটা লড়াই হয়ে যায়। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ছেলেকে কে আগে কোলে নেবেন তার লড়াইয়ে নাসির জয়ী হন।
পাকিস্তানকে হারিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিল টাইগার বাহিনী। তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে টাইগারদের জয় উৎযাপনে। এ যেন অন্য এক বাংলাদেশ, অন্য একটি পরিবার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ২৫ এপ্রিল ২০১৫
এমআর