মিরপুর থেকে: টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বেশ সতর্ক ব্যাটিং করে যাচ্ছে সফরকারীরা। সাজঘরে ফিরেছেন হাফিজ, সামি আসলাম এবং আজহার আলি।
৭ উইকেট হাতে থাকা সফরকারীদের লিড ৪১৬ রান। তিন উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ৬২ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে মোহাম্মদ শহীদের চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন গত টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হাফিজ। এ টেস্টের প্রথম ইনিংসেও শহীদের বলে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন হাফিজ। সে ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল মাত্র ৮ রান।
দলীয় কোনো রান না তোলার আগেই হাফিজের বিদায়ের পর দিনের দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট হাতে নামেন আজহার আলি এবং সামি আসলাম। উইকেট তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ শহীদ। হাফিজের পর শহীদের শিকার হয়ে ফেরেন সামি আসলাম। ৮ রান করে মাহমুদুল্লাহর তালুবন্দি হয়ে ফেরেন আসলাম।
শহীদের পর জ্বলে উঠেন সৌম্য সরকার। নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের অভিষেক উইকেট পান সৌম্য। গত ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান আজহার আলিকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। শুভাগত হোমের হাতে ধরা পড়ে আউট হওয়ার আগে আজহার ৩৮ বলে করেন ২৫ রান।
এর আগে বাংলাদেশকে ২০৩ গুটিয়ে দিয়েও খুলনা টেস্টের ভয় পাকিস্তানকে ভয় দেখায়। গত টেস্টে প্রায় দুইদিন ব্যাটিং করে ম্যাচ ড্র করেছিল স্বাগতিকরা। তাই বাংলাদেশকে ফলোঅনে না পাঠিয়ে নিজেরাই ব্যাটিংয়ে নেমে যায় সফরকারীরা।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৯ উইকেট হারিয়ে ২০৩ রান তোলে। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩৫৪ রানে পিছিয়ে থাকে স্বাগতিকরা।
এর আগে টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা স্বাগতিকদের হয়ে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মাঠে নামেন সাকিব এবং সৌম্য সরকার। কিন্তু ওয়াহাব রিয়াজের বোলিং গতিতে শর্ট কাভারে আজহার আলির তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন সৌম্য। আউট হওয়ার আগে মাত্র ৩ রান আসে সৌম্যর ব্যাট থেকে।
সাকিবকে সঙ্গ দিতে নামা শুভাগত হোম ওয়াহাবের পরের ওভারে আসাদ শফিকের তালুবন্দি হয়ে কোনো রান না করেই ফেরেন। দলীয় ১৪০ রানের মাথায় বাংলাদেশের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন তাইজুল ইসলাম। হাফিজের বলে বোল্ড হয়ে আউট হওয়ার আগে ২২ বল খেলে তাইজুল করেন ১৫ রান।
প্রথম দিনের ‘নো বল’ আক্ষেপ আর দ্বিতীয় দিন বোলিং-ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা স্বাগতিক বাংলাদেশকে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। তৃতীয় দিন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যাট হাতে নামেন আগের দিনের অপরাজিত থাকা সাকিব আল হাসান। তাকে সঙ্গ দিতে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে দিন শুরু করেন সৌম্য সরকার।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৯তম অর্ধশতককে চতুর্থ শতকে রূপ দিতে পারেন নি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টাইগারদের অষ্টম উইকেট পড়ে গেলে হাত খুলে খেলা শুরু করেন সাকিব। মোহাম্মদ শহীদ আউট হয়ে গেলে আর শাহাদাত হোসেনের অনুপস্থিতিতে সাকিবকে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকতে হয়।
দ্বিতীয় দিন শেষে ১০৭ রান তুলতেই স্বাগতিকদের টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যান বিদায় নেন। খুলনা টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল মাত্র ৪ রান করেই আউট হন। আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস নিজেকে উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ব্যাট করতে থাকলেও ব্যক্তিগত ৩২ রান করে ফেরেন। তবে, তার আগে টেস্ট ক্রিকেটের ‘বিস্ময় বালক’ খ্যাত মুমিনুল হক দলীয় ৩৮ রানের মাথায় দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন। আউট হওয়ার আগে মুমিনুল করেন ১৩ রান।
২৮ রান করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলীয় ৮৫ রানের মাথায় চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলে ব্যাটিং ক্রিজে আসেন টাইগার দলপতি মুশফিকুর রহিম। তবে, দিনের শেষ ওভারের এক বল বাকি থাকতে ১২ রান করে স্বাগতিকদের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন।
এর আগে পাকিস্তান ৮ উইকেট হারিয়ে ৫৫৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের হয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ২২৬ রান করেন আজহার আলি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪৮ রান আসে পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ইউনিস খানের ব্যাট থেকে। আর আসাদ শফিক টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক হাঁকিয়ে করেন ১০৭ রান।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে নয়জন বোলার বল করলেও ইনিংস সর্বোচ্চ তিন উইকেট দখল করেন তাইজুল ইসলাম। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ শহীদ এবং শুভাগত হোম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, ০৮ মে ২০১৫
এমআর
** সৌম্য ফেরালেন আজহারকে
** পাকিস্তানের সতর্ক ব্যাটিং
** শহীদকে সামলে খেলছে পাকিস্তান
** বিরতির পর মাঠে নেমেছে স্বাগতিকরা
** ফিল্ডিংয়ে নেমেই হাফিজকে ফেরালেন শহীদ
** ২০৩ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ
** বিপর্যয়ে বাংলাদেশ, উইকেটে আছেন সাকিব
** সাকিবের অর্ধশতক
** শুরুতেই ফিরলেন সৌম্য, শুভাগত
** লড়াই চালিয়ে যেতে দিন শুরু টাইগারদের
** দৈন্যদশা ব্যাটিংয়েও, ফলোঅনের শঙ্কা