ঢাকা: বাংলাদেশের মিডলঅর্ডারের ব্যাটিং নির্ভরতার নাম মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে, টাইগারদের ‘রান মেশিন’ মুশফিক।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক গুটিগুটি পায়ে টাইগারদের হয়ে ১০ বছর ক্রিকেট খেলে ফেলেছেন। দশ বছর আগে লর্ডসের মাঠে আজকের দিনে (২৬ মে) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুশফিকের টেস্ট অভিষেক ঘটে।
দশ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে মুশফিক তার ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজকের এই দিনে বাংলাদেশের হয়ে আমার অভিষেক হয়েছিল দশ বছর আগে। চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। বাবা-মা, ভাই-বোন, পরিবারের অন্য সবাইকে আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। বিশেষ ধন্যবাদ জানাই আমার বন্ধুদের। বগুড়া জেলা স্কুল, বিকেএসপি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই। আমার শিক্ষকদের-কোচদের ধন্যবাদ জানাই। আর সব থেকে বেশি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের মানুষকে। যারা আমার এবং দলের পাশে ছিলেন। এভাবেই আমাদের সমর্থন করতে থাকুন, ইনশাআল্লাহ আমরা এর প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সফল এ অধিনায়কও নিজের যোগ্যতা ও প্রতিভার প্রমান দিয়ে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তিনিই প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।
৩২১টি বল মোকাবেলা করে ২২ চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে ২০০ রান করেন টাইগার এ ব্যাটসম্যান। ২০১৩ সালের শ্রীলঙ্কা সফরে এই রেকর্ডটি হয়। সেসময় মুশফিক অষ্টম উইকেটরক্ষক হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন এবং নবম ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে ৬ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করেন।
২০০৫ সালের ২৬ মে ইংল্যান্ড সফরে মুশফিক প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পান। ইংল্যান্ডের মাটিতে এটাই ছিলো বাংলাদেশের প্রথম সফর। অপরিচিত পরিবেশ এবং স্বাগতিকদের পেস বোলিং মোকাবেলায় তাই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের যথেষ্ট ভুগতে হয়েছিল। প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলে মুশফিক পরিবেশের সাথে ধাতস্থ হয়ে নেন। প্রস্তুতি ম্যাচে সাসেক্সের বিপক্ষে তার ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। আর নটিংহ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৫ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস খেলেন তিনি।
ফলশ্রুতিতে লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তিনি স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে জায়গা করে নেন। তরুণ মুশফিক প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯ রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরত যান। দল অল আউট হয় ১০৮ রানে এবং জাভেদ উমর বেলিম আর আফতাব ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেন নি। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩ রান করে ফ্লিনটফের বলে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন তিনি। এ্যাংকেল ইনজুরির কবলে পড়ায় সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো তার আর খেলা হয়নি।
২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে মুশফিক বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন। মুশফিকের নেতৃত্বে টাইগাররা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যায়। একই বছর জিম্বাবুয়ে সফরে মুশফিক আবার জাতীয় দলে সুযোগ পান। সে সফরে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুশফিক তার প্রথম অর্ধশতকের দেখা পান। পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের জন্য খালেদ মাসুদের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মুশফিককে।
২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিন মুশফিক তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, ২৬ মে ২০১৫
এমআর