চট্টগ্রাম থেকে: তৃতীয় দিন মুশফিক আর সাকিবের বিদায়ের পর লিটন দাশের ব্যাটে এগুচ্ছে স্বাগতিকদের ইনিংস। এখন পর্যন্ত ৬৪ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা, হাতে রয়েছে আরও তিন উইকেট।
প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে দারুণ খেলতে থাকা লিটন কুমার দাসকে ভারতের বিপক্ষে সুযোগ দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। আর সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রথম টেস্টে বেশ ভালোই করেন লিটন। সাদা পোষাকে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে ক্যারিয়ার সেরা রান করে অপরাজিত রয়েছেন তিনি।
দ. আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে করা ২৪৮ রানকে টপকে লিড নিচ্ছে বাংলাদেশ। লিটন দাশ ৪৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। আর শহীদ কিছুটা মারমুখি হয়ে আউট হওয়ার আগে করেন ২৫ রান।
দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১০৭.৩ ওভার খেলে সাত উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৩১১ রান।
হাতে ৬ উইকেট নিয়ে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন শুরু করেন আগের দিনের অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসান। তবে, ইনিংসের ৭৩তম ওভারে ডেল স্টেইনের শিকারে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। টাইগার দলপতি এলবি’র ফাঁদে পড়ে আউট হওয়ার আগে ৬১ বল মোকাবেলা করে ২৮ রান করেন।
দিনের শুরুতে মুশফিকের উইকেট হারিয়ে এগিয়ে চলে টাইগার বাহিনী। প্রথম সেশন শেষের ঠিক আগ মুহূর্তে লিড নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় টাইগার বাহিনী। তবে, মধ্যাহ্ন বিরতির পর দিনের দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নামার আগে জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বৃষ্টি হানা দেয়। ফলে বিলম্ব হয় টাইগারদের দ্বিতীয় সেশনের ব্যাটিং। বৃষ্টির কারণে আধাঘণ্টা পিছিয়ে খেলা শুরুর সময় দেওয়া হয় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম অর্ধশতক থেকে তিন রান দূরে থাকতে বিদায় নেন সাকিব আল হাসান। দলীয় ১০২তম ওভারে সিমন হারমারের করা শেষ বলে তুলে মারতে গিয়ে শর্টমিড উইকেটে ডুমিনির হাতে ধরা পড়েন সাকিব। আউট হওয়ার আগে ১১৪ বলের ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৪৭ রান। লিটন দাশকে সঙ্গে নিয়ে ৮২ রানের জুটি গড়েন সাকিব।
৬৯ রান পিছিয়ে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামে টাইগাররা। দ্বিতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের চার উইকেট হারিয়ে দলীয় সংগ্রহ ছিল ১৭৯ রান।
এর আগে প্রথম দিনের ২ ওভারের সঙ্গে দ্বিতীয় দিন ৬৫ ওভার পর্যন্ত খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশন থেকে টাইগারদের আসে ৭৩ রান। প্রথম সেশনে ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হকের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে দু’টি উইকেট হারালেও দিনের দ্বিতীয় সেশনে শুধু তামিম ইকবালের উইকেট হারায় টাইগাররা। দ্বিতীয় সেশনেও স্বাগতিকদের আসে আরও ৭৩ রান।
দ্বিতীয় দিন দলীয় ৪৬ রানের মাথায় ইনিংসের ১৯তম ওভারে অনিয়মিত বোলার স্টিয়ান ভ্যান জিলের দ্বিতীয় বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। ইমরুলের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। দলীয় ৫৫ রানের মাথায় সিমন হারমারের দারুণ এক ঘূর্ণিতে বলের লাইন মিস করে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন মুমিনুল হক (৬ রান)। আর দলীয় ১৪৪ রানের মাথায় টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম অর্ধশতক হাঁকানো তামিম ইকবাল ডিন এলগারের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। আউট হওয়ার আগে তিনি ১২৯ বলের মোকাবেলা করে তিনটি চারের সাহায্যে করেন ৫৭ রান। সাজঘরে ফেরার আগে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে তামিম জুটি গড়েন ৮৯ রান।
দলীয় ১৭৮ রানের মাথায় বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। ভারনন ফিল্যান্ডারের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক হাঁকানো মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে টাইগারদের এ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৬৭ রান। ১৩৮ বলের মোকাবেলা করে রিয়াদ দশটি চার হাঁকান। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তিনি ৩৪ রানের জুটি গড়েন।
টেস্টের প্রথম দিন অলআউট হওয়ার আগে দ. আফ্রিকা ২৪৮ রানেই গুটিয়ে যায়। মুস্তাফিজুর রহমান, জুবায়ের হোসেন, মোহাম্মদ শহীদদের বোলিং তোপে প্রোটিয়ারা ৮৩.৪ ওভার ব্যাট করতে সক্ষম হয়। কার্টার মাস্টার মুস্তাফিজ আর স্পিন জাদুকর জুবায়ের হোসেনের দুটি ভয়াল স্পেলে দ. আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে যায়। টাইগারদের হয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। আর তিনটি উইকেট দখল করেন জুবায়ের হোসেন। এছাড়া সাকিব, মাহামুদুল্লাহ, তাইজুল একটি করে উইকেট পান।
প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৪ রান আসে পাঁচ নম্বরে ব্যাট হাতে নামা তেমবা বাভুমার ব্যাট থেকে। এছাড়া ফাফ ডু প্লেসিস ৪৮ ও ওপেনার ডিন এলগার ৪৭ রান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ২৩ জুলাই ২০১৫
এমআর
** সাকিবের বিদায়
** বড় লিডের পথে স্বাগতিকরা
** মধ্যাহ্ন বিরতি, লিড নিয়েছে বাংলাদেশ
** লিডের পথে টাইগারদের ইনিংস
** মুশফিকের বিদায়ে নেমেছেন লিটন
** তৃতীয় দিন শুরু করেছে টাইগাররা