ঢাকা: ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি সাবেক ক্রিকেটার ফ্রাঙ্কলিন রোজের মতে, নিউজিল্যান্ডকে ব্লাকক্যাপস বলা হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জন্য দেশটি মোটেই নিরাপদ নয়। বিশেষ করে ‘কালো’দের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নয় নিউজিল্যান্ড।
সাবেক ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার রোজ ২০১১ সালে নিউজিল্যান্ডে খেলতে যান। দেশটিকে পছন্দ হওয়ায় পরের বছর পরিবার নিয়ে সেখানে বাস করতে থাকেন তিনি। কিন্তু, তিনি বুঝতে পারেননি ‘কালো’দের জন্য মোটেও নিরাপদ আশ্রয় নয় নিউজিল্যান্ড।
২০১২ সালে রোজের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া, তার জীবন দুর্বীসহ করে তোলে ধষর্ণ মামলার মিথ্যে অভিযোগ। দুর্বৃত্তদের হামলায় রোজের ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধায় বিমানযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন কিউই চিকিৎসকরা। ফলে, নিজের দেশেও ফিরতে পারছিলেন না ক্যারিবীয় এই ক্রিকেটার।
এদিকে, রোজের ভিসার মেয়াদও পেরিয়ে যেতে থাকে। এক সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলও খাটতে হয় তাকে। ইডেনের জেলে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ধষর্ণ মামলার মিথ্যে অভিযোগ উঠে। তাতে রোজের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।
গত এপ্রিলে রোজকে জ্যামাইকায় ফেরত পাঠায় নিউজিল্যান্ড পুলিশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১৯৯৭-২০০০ সাল পর্যন্ত ১৯টি টেস্ট খেলা এই ক্রিকেটার অকল্যান্ডে খেলার সুবাদে গেলেও পরে তাকে একটি দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ইডেন জেলে থাকাকালীন তার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করে জেল কর্তৃপক্ষ-এমনটি জানিয়ে রোজ বলেন, আপনি একজনকে কোনো কারণ ছাড়াই আপনার দেশে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন না। আপনি একজন ক্রিকেটারকে খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন, কোচিং পদে নিয়োগ দিলেন আর পরবর্তীতে তাকে কোনো কারণ ছাড়াই জেলে ঢুকিয়ে দিলেন? শুধু তাই নয় এক সময় লাথি দিয়ে দেশ থেকে বের করে দিলেন! এমনটা নিউজিল্যান্ডের মাটিতেই সম্ভব, যদি আপনি ‘কালো’ হন।
তিনি জানান, আমার বিশ্বাস নিউজিল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কালোদের ‘অপরাধী’ হিসেবেই জানে। আমাকে জেলে রাখা হয়েছিল সিরিয়াল কিলারদের (খুনি) সঙ্গে। সেখানে আরও ছিল ধর্ষক ও মাদক বিক্রেতা। ইচ্ছাকৃত কোনো দোষ না করেও আমাকে প্রথম দফায় প্রায় সাত সপ্তাহ জেলে থাকতে হয়েছে। আমি ‘কালো’ জন্যই এমন ব্যবহার পেয়েছি কিউইদের কাছ থেকে। নিউজিল্যান্ড ছবির মতো সুন্দর দেশ হলেও, সেখানে আন্তর্জাতিকভাবে যাওয়া ‘কালো’ বর্ণের ক্রিকেটাররা নরকযন্ত্রণায় থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ১১ জুন ২০১৬
এমআরপি