ঢাকা: ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের এবারের আসরে অংশ নেওয়া জাতীয় দলের সকল ক্রিকেটারকে টপকে লিগের সর্বোচ্চ স্কোরার জাতীয় দলের এক সময়কার নিয়মিত মুখ রকিবুল হাসান। লিগের রানার্সআপ প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১৬ ম্যাচে পাঁচটি অর্ধশতক ও একটি শতকে ৬৫.৩৬ গড়ে ৭১৯ রান করে টপকে যান আব্দুল মজিদ (৭০৬), তামিম ইকবালদের (৭১৪)।
মৌসুমের শুরু হয় লংগার ভার্সন বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) দিয়ে। মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টেই সফল হয়েছেন তিনি। দুই ম্যাচ কম খেলেও আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার হন রকিবুল। ৪ ম্যাচে ৮ ইনিংসে ব্যাট করে দুই শতক ও দুই অর্ধশতকে সেন্ট্রাল জোনের হয়ে ৭৪.৪২ গড়ে ৫২১ রান করেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রিমিয়ার লিগেও দারুণ সফল। মনের মাঝে নতুন করে জমাট হওয়া আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে ফিরতে চান স্বপ্নের ঠিকানা জাতীয় দলে।
জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন, প্রিমিয়ার লিগে ব্যক্তিগত ও দলগত পারফরম্যান্স এবং বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দল নিয়ে রকিবুল হাসান কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। তার একান্ত সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট সাজ্জাদ খান। ছবি তুলেছেন সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট শোয়েব মিথুন।
বাংলানিউজ: ক্যারিয়ারের প্রথম প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় পর আবারো সেরা হলেন। কেমন লাগছে?
রকিবুল হাসান: খুব ভালো লাগছে। আমি চাচ্ছিলাম সেরাটা দিয়ে খেলার। সে অনুযায়ী ভালো একটা ফিডব্যাক পেয়েছি। এজন্য মনের মধ্যে আনন্দ অনুভব করছি। আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি। যে হার্ডওয়ার্কটা করেছি তার ফল পেয়েছি। আশা করি, এই ধারাবাহিকতা, হার্ডওয়ার্ক আর ভালো খেলার ছন্দটা ধরে রাখব।
বাংলানিউজ: হাডওয়ার্কের কথা বললেন। সেটা কতটা ছিল?
রকিবুল হাসান: মৌসুম শুরু হওয়ার আগে ফাহিম স্যারের (বিসিবির গেম ডেভেলপম্যান্ট ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন) সঙ্গে কাজ করেছি। অনূর্ধ্ব-১৬ দলের মাধ্যমে যখন ক্যারিয়ার শুরু হয় তখন স্যার আমার ব্যাটিংটা স্পেশালি দেখতেন। টেকনিক্যালি এবং মেন্টালি যথেষ্ট পরামর্শ পাই তার থেকে। তার কাছে যতটা কৃতজ্ঞ, একইভাবে আমার দলের কোচ বাবুল স্যারের (মিজানুর রহমান) কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। তাদের সাথে টিমমেটরাও আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
বাংলানিউজ: সবাই আপনাকে মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই চেনে। প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটা ম্যাচে ওপেনিংয়ে নামতে দেখলাম। সেঞ্চুরিটা পেয়েছেন ওপেনিংয়ে নেমেই। কোনো রহস্য?
রকিবুল হাসান: রহস্য নেই (হাসি)। শুরুর দিকে ন্যাচারালি আমি ওপেনিং ব্যাটসম্যানই ছিলাম। অনূর্ধ্ব-১৭ দল ও ১৯ এবং ‘এ’ দলের হয়ে ওপেন করেছি। অনেকে হয়তো জানেন না। লিগে ওপেনিংয়ে নামা টিমের সিদ্ধান্তই ছিল, আমিও একমত ছিলাম। সম্ভবত দুই থেকে তিনটা ম্যাচে ওপেন করেছি। মনে হয়েছে আবার সেই অনূর্ধ্ব-১৭ দল, ১৯ দলে ফিরে গেছি। ওই সময়কার ইমেজ, অনুভূতিটা মনে হয় ফিরেছিল। খুব উপভোগ করেছি।
বাংলানিউজ: শুরু থেকেই প্রাইম দোলেশ্বর পয়েন্ট টেবিলে রাজত্ব করে আসছিল। ভালো করার প্রেরণা দলের মাঝে কিভাবে ছড়ালো?
রকিবুল হাসান: দারুণ টিম কম্বিনেশনের জন্য প্রাইম দোলেশ্বর কমকর্তাদের ধন্যবাদ দিতে চাই। বাবুল স্যার এর আগেও প্রাইম দোলেশ্বরের সাথে কাজ করেছেন। টিমটা সম্পর্কে তিনি জানেন, প্লেয়ারদের কেমন পরিবেশ পছন্দ সেটা বুঝেন। আমরা একটা পরিবারের মতো ছিলাম। কেউ ব্যর্থ হলে তাকে সাপোর্ট করেছি। এমন পরিবেশের জন্য লিগের প্রথম ১০-১১ রাউন্ড পর্যন্ত আমরা শীর্ষে ছিলাম। দুই-একটা ম্যাচ খারাপ হয়ে গেছে। তারপরও কামব্যক করেছি আমরা।
বাংলানিউজ: চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য আক্ষেপ?
রকিবুল হাসান: ডেফেনেটলি। কারণ, মোহামেডান এক সময় উপরে ছিল। একদম শেষের দিকে আবাহনী চলে আসলো। সে হিসেবে আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি আমরাই চ্যাম্পিয়ন টিম। ওভাবেই আমরা খেলেছি। ভাগ্য আমাদের সহায় হয়নি। তবে আমরা নিজেদের চ্যাম্পিয়ন টিমই মনে করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, ২৭ জুন ২০১৬
এসকে/এমআরপি