মিরপুর থেকে: ২৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আফগানিস্তান! নবম উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছে সফরকারীরা।
এ রিপোর্ট লেখা অবধি, সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের সংগ্রহ ৩২.২ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩২।
১৭তম ওভারে সাকিব আল হাসানের থ্রোতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক আসগর স্তানিকজাই (১)। তার আগে নিজের তৃতীয় ওভারে নওরোজ মঙ্গল (৩৩) ও হাসমতউল্লাহ শাহীদিকে (০) ফিরিয়েছেন আট বছর পর দলে ফেরা স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেল।
পাঁচ রান তুলতেই প্রথম উইকেট হারায় আফগানরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই মোহাম্মদ শাহজাদের (০) স্ট্যাম্প ভাঙেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নওরোজের সঙ্গে ৪৭ রান যোগ করেন ওয়ানডাউনে নামা রহমত শাহ।
এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবারের (১ অক্টোবর) ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি ও সাব্বির রহমানের ফিফটিতে নির্ধারিত ওভারে আট উইকেটে ২৭৯ রানের লড়াকু পুজি পায় বাংলাদেশ। সিরিজ নিশ্চিতের সঙ্গে ওয়ানডেতে শততম জয় ভিন্ন কিছুই ভাবছে না টাইগাররা।
বলে রাখা ভালো, প্রথম ম্যাচে ২৬৫ রান করে প্রায় হারের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। স্লগ ওভারগুলোতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সাত রানের কষ্টার্জিত জয়ই পায় মাশরাফিবাহিনী।
প্রায় দেড় বছরের আক্ষেপ ঘুঁচিয়ে ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। সমানসংখ্যক বলে তার ১১৮ রানের ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও ২টি ছক্কার মার। কিন্তু ৩৯তম ওভারে দলীয় ২১২ রানে তামিমের বিদায়ের পর সাকিব-মুশফিক-মোসাদ্দেক দ্রুত বিদায় নিলে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। বড় সংগ্রহের লক্ষ্য থেকে ব্যাকফুটে চলে যায় দল।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ব্যক্তিগত ১ রানে জীবন পেয়েছিলেন তামিম। মোহাম্মদ নবীর বলে মিডঅনে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন অাফগান অধিনায়ক আসগর স্তানিকজাই। শেষ পর্যন্ত এর চড়া মাশুলই গুণতে হয় সফরকারীদের।
ষষ্ঠ ওভারে মিরওয়েস আশরাফের বলে মোহাম্মদ শাহজাদের গ্লাভসবন্দি হয়ে পুরো ওয়ানডে সিরিজেই ব্যর্থতার পরিচয় দেন সৌম্য সরকার (১১)। আগের দুই ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ০, ২০।
সৌম্যর ব্যর্থতার বিপরীতে চেনা রূপে ফেরেন সাব্বির। প্রথম দুই ওয়ানডের ব্যর্থতা (২, ৪) ভুলে ৬৫ রানের কার্যকরী ইনিংস উপহার দেন তিনি। ছাড়িয়ে যান একদিনের ক্রিকেটে নিজের আগের সর্বোচ্চ স্কোর (৫৭)। ৩১তম ওভারে নওরোজ মঙ্গলের বলে রহমত শাহর ক্যাচে পরিণত হন।
এছাড়া আর কেউই বলার মতো স্কোর করতে পারেননি। সাকিব আল হাসান ১৭, মুশফিকুর রহিম ১২ রান করে আউট হন। আগের ম্যাচে ৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে অভিষেকেই আলো ছড়ানো মোসাদ্দেক হোসেন ব্যক্তিগত ৪ রানে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন।
আফগানদের হয়ে মোহাম্মদ নবী, মিরওয়েইস আশরাফ ও রশিদ খান দু’টি করে উইকেট লাভ করেন। একটি করে নেন দাওলাত জাদরান, রহমত শাহ।
এ ম্যাচে জয় পেলে দেশের মাটিতে টানা ছয়টি সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়বে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ওয়ানডেতে শততম জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করবে মাশরাফিবাহিনী।
তৃতীয় ওয়ানডের জন্য ঘোষিত স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া পেসার রুবেল হোসেনের পরিবর্তে শফিউল ইসলাম ও তাইজুল ইসলামের জায়গায় খেলছেন বাঁহাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেল। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ আট বছর পর ওয়ানডে টিমে ফিরলেন মোশাররফ। অন্যদিকে, নবীন উল হকের জায়গায় আফগান একাদশে সুযোগ পেয়েছেন স্পিন অলরাউন্ডার সামিউল্লাহ শেনওয়ারি।
প্রথম ওয়ানডেতে আফগানদের ৭ রানে হারিয়ে সিরিজে লিড (১-০) নেয় টাইগাররা। কিন্তু পরের ম্যাচেই ২ উইকেটের জয়ে সমতায় (১-১) ফেরে সফরকারীরা।
বাংলাদেশের একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান, মোশাররফ হোসেন রুবেল, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম।
আফগানিস্তানের একাদশ: মোহাম্মদ শাহজাদ (উইকেটরক্ষক), নওরোজ মঙ্গল, রহমত শাহ, হাসমতউল্লাহ শাহিদী, আজগর স্তানিকজাই (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নবী, নজিবুল্লাহ জাদরান, রশিদ খান, মিরওয়াইজ আশরাফ, দৌলত জাদরান, সামিউল্লাহ সেনওয়ারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ০১ অক্টোবর, ২০১৬
এমআরএম