ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

টাইগারদের ভিন্নমাত্রিক লঙ্কা অভিযান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০১৭
টাইগারদের ভিন্নমাত্রিক লঙ্কা অভিযান ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের মাটিতে সবশেষ টেস্ট খেলেছে ২০১৩ সালে। ওই বছর স্বাগতিক লঙ্কান দলে ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, তিলকারত্নে দিলশান, নুয়ান কুলাসেকারা ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের মতো অভিজ্ঞ এক একজন ক্রিকেটার। চার বছরের ব্যবধানে টাইগাররা আবার যখন লঙ্কানদের বিপক্ষে তাদের মাটিতে লড়বে তখন তাদের সামনে সম্পূর্ণই ভিন্ন এক শ্রীলঙ্কা।

ক্রিকেটের সব ফরমেট থেকে অবসর নেয়ায় এই হোম সিরিজে কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, তিলকারত্নে দিলশানের মতো পিরামিডসম ব্যাটসম্যানদের পাচ্ছে না স্বাগতিকরা। আর টেস্ট ও ওয়ানডে ফরমেট থেকে বিদায় নেয়ায় দলে নেই অভিজ্ঞ ফাস্ট বোলার নুয়ান কুলাসেকারাও।

এদিকে ইনজুরির অভিশাপে ছিটকে গেছেন অলরাউন্ডার ও অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ফলে সিরিজটি যে বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণই ভিন্ন রকম সে কথা বলার আর অপেক্ষা থাকছে কোথায়?

এমনই এক ভিন্নমাত্রিক অভিযানে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে গলের সবুজ মাঠে নামছে সফরকারী বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায়।

একথা ঠিক লঙ্কান দলে অভিজ্ঞদের সংখ্যা কম। তারপরেও টাইগারদের মোকাবেলা করতে তাদের বর্তমান স্কোয়াডে থাকা রঙ্গনা হেরাথ, দিনেশ চান্দিমাল, দিমুথ করুনারত্নে, সুরাঙ্গা লাকমল ও উপল থারাঙ্গারাই বা কম কিসে? সফরকারীদের বিপক্ষে তারা একযোগে জ্বলে উঠলে ম্যাচের মোমেন্টাম যে কোনো সময় তাদের দিকে চলে যেতেই পারে।

এছাড়াও মুশফিক ও তার দলের বিপক্ষে এই সিরিজে ভালো কিছু করতে অতীত পরিসংখ্যান থেকেও অনুপ্রেরণা নিতে পারে রঙ্গনা হেরাথের দল। কেননা টাইগারদের বিপক্ষে এই পর্যন্ত ১৬টি টেস্ট খেলে, ১৪টিতেই জয়ের শেষ হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে শ্রীলঙ্কা। আর বাকি দুটি ম্যাচ হয়েছে ড্র’। তার মানে এ পর্যন্ত একটি টেস্টেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ! কাজেই সফরকারীদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এমন উৎসাহব্যাঞ্জক পরিসংখ্যানে সন্দেহাতীতভাবেই স্বাতিকরা এগিয়ে থাকবে।

তবে ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। মুহূর্তেই বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। পরিসংখ্যানগতভাবে পিছিয়ে থাকলেও টাইগাররা যখন সফরকারী দলটির বিপক্ষে এই ম্যাচে মাঠে নামবে তখন নিশ্চয়ই নিজেদের সেরা খেলাটিই খেলবে, যা ভেঙে দিতে পারে আগের সেই জরাজীর্ণ সব পরিসংখ্যান। সেটা না পারার অবশ্য কোনো যৌক্তিক কারণও নেই। কেননা প্রায় দেড় বছর টেস্ট ক্রিকেট থেকে বাইরে থাকার পরও গত বছরের অক্টোবরে ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে দাপুটে এক অধ্যায়ের রচনা করেছে মুশফিকুর রহিম ও তার দল।

ইংলিশদের বিপক্ষে টাইগারদের ঘরের মাটিতে দেখানো এই দাপট অব্যাহত ছিল জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরেও। একথা ঠিক, দুই ম্যাচ সিরিজের একটিতেও সফরকারীরা জয় তুলে নিতে পারেনি। কিন্তু স্বাগতিকদের মাটিতে, তাদের বোলারদের বিপক্ষে ব্যাটে হাতে সাকিব ও মুশফিক যে ঝলক দেখিয়েছেন তাতে চোখ কপালে উঠে গেছে খোদ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডেরও।

কম যাননি পরের মাসে খেলা ভারতের বিপক্ষে হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামেও। টেস্টের শীর্ষে থাকা দলটির বিপক্ষে নয় নম্বরের বাংলাদেশের চোখে চোখ রাখার লড়াইটা ছিল দারুণ অনুপ্রেরণাদায়ক। সিরিজের একমাত্র সেই টেস্টে বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে যেখানে তিন দিনেই তাদের গুটিয়ে যাবার শঙ্কা ছিল, সেখানে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সফকারীদের পাঁচদিনের লড়াইটা নিঃসন্দেহে তাদের টেস্ট সামর্থ্যকে দারুণভাবে জানান দিয়েছে।

টেস্ট ফরমেটের ঠিক এমনই এক মোমেন্টাম সাথে নিয়েই সিরিজের প্রথম টেস্টে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞতার পাল্লায় পিছিয়ে থাকা লঙ্কানদের বিপক্ষে অভিজ্ঞ টাইগাররা এই ম্যাচে কতটুকু ভালো করতে সমর্থ হন, সেটা দেখতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ম্যাচের শেষ দিন পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘন্টা, ৬ মার্চ ২০১৭
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।