ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তোর নিরাপত্তা কে দেয় দেখবো: সাংবাদিককে ছাত্রলীগের হুমকি 

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
তোর নিরাপত্তা কে দেয় দেখবো: সাংবাদিককে ছাত্রলীগের হুমকি  সাংবাদিক হেনস্তাকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ভিডিও ফুটেজ নিতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কর্মরত এক সাংবাদিককে হেনস্তা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

 

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে  বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এসময় ওই 'নারী' সংবাদকর্মীকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন ছাত্রলীগের অনুসারীরা।

এছাড়া সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় একটি ভিডিও ফুটেজে। ঘটনার সময় ওই সাংবাদিকের ব্যাগ টেনে নেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন ছাত্রলীগ কর্মীরা।

ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী মারজান আকতার দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য। তিনি চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা হলেন- ভিক্স গ্রুপের অনুসারী ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মারুফ হাসান, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তৌহিদুল হক ফাহাদ, একই সেশনের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শহীদুর রহমান স্বপনসহ আরও ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী।

ভুক্তভোগী মারজান আকতার বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের অনুসারীরা যখন চারুকলার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাধা দিচ্ছিলেন, তখন পেশাগত দায়িত্ব হিসেবে আমি ফুটেজ নিচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রুপের অনুসারীরা এসে আমাকে আটকায় এবং ভিডিও ডিলিট করার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি ভিডিও ডিলিট করবো না বলায় তারা আমাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এ সময় তারা বলছিলো 'তোর নিরাপত্তা কে দেয় আমরা দেখবো'। চারদিক থেকে ঘিরে ধরে আমার সঙ্গে এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। পরে আমি সেখান থেকে আসার সময় তারা আমার মোবাইল এবং ব্যাগ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।  

প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, চারুকলার শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থানের বিষয়ে আগে থেকে আমাদেরকে কিছু জানায়নি। তাই আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা না থাকায় এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে আমরা আগেও ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।

এর আগে বেলা সাড়ে ১০টায় ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বাংলার মুখ এবং ভিএক্স'র নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের বাধা দেন। ব্যানার ফেস্টুন কেড়ে নেওয়া হয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে  আরটিভির ফটো সাংবাদিক এমরাউল কায়েস মিঠু ছাত্রলীগ নেতাক্রর্মীদের হাতে হেনস্তার শিকার হন।

অভিযুক্তদের একজন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভিএক্স গ্রুপের নেতা মারুফ আহমেদ বলেন, চারুকলার আন্দোলনে আমাদের কিছু ছেলে অংশগ্রহণ করেছিল। আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য ওখানে গিয়েছিলাম। আমাদের ছেলেদের বাইরে অন্য কাউকে কোনো বাধা দেয়নি।  

সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সাংবাদিককে প্রথমে সাধারণ শিক্ষার্থী মনে করেছিলাম। তাই ভিডিও ডিলিট করতে বলি। কিন্তু তিনি যখন সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছেন তখন আমরা আর কিছু বলিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
এমএ/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।