ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাংবাদিককে পিটিয়ে ভবন থেকে ফেলে দিল দুর্বৃত্তরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৩
সাংবাদিককে পিটিয়ে ভবন থেকে ফেলে দিল দুর্বৃত্তরা ...

চট্টগ্রাম: ভূমিদস্যু কর্তৃক পাহাড়ের মাটি কাটার সংবাদ প্রকাশ করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে ভবনের ৩ তলা থেকে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

একটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকের চন্দনাইশ প্রতিনিধি আইয়ুব মিয়াজী (৩৪) নামের ওই সাংবাদিকের পাঁজরের তিনটি হাড় ভেঙে গেছে।

তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।  

গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন আর কে প্লাজায় ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

ভবন থেকে ফেলে দেওয়ার একটি সিসিটিভি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।  

আহত সাংবাদিকের দাবি, চন্দনাইশ উপজেলার জামিজুরি ইউনিয়নের উত্তর জামিজুরি আদর্শ গ্রাম, পূর্ব জামিজুরি আনসার আলী পাড়া ও জঙ্গল জামিজুরি এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ঘটনার সংবাদ ১০-১২ দিন আগে পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কারণে স্থানীয় আলাউদ্দিনের নেতৃত্বেএই হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুইমাস ধরে জামিজুরি এলাকায় ব্যক্তিগত, সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড়ে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা আর কে প্লাজায় আমার কম্পিউটার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠানে এসে ভাঙচুর চালায়। তারা আমাকে দা দিয়ে কোপ মারার চেষ্টা করে, লোহার বাটাম দিয়ে বুকে আঘাত করে। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নিচে ফেলে দেয়। এসময় নগদ ৫০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন, চারটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়’।  

হামলার ঘটনায় ওইদিন রাতে আইয়ুব মিয়াজীর বাবা আবদুস শুক্কুর বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় মামলা করেছেন। তবে পুলিশ এখনও ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

সাংবাদিক আইয়ুব মিয়াজীর বাবা আবদুস শুক্কুর বলেন, ‘আমার ছেলে পাহাড় কাটার সংবাদ পত্রিকায় লিখেছিল। এ কারণে তাকে হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভবন থেকে ফেলে দিয়েছে তারা। প্রথমে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়’।  

চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগম বলেন, ‘ওই সাংবাদিক মাটি কাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর আমাদের জানিয়েছিলেন। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে দুই দফা অভিযান চালায়। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। মাটি কাটার বিষয়টি দৃশ্যমান ছিল। তার ওপর হামলার খবর শুনেছি। বিষয়টি জেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং মামলা করার জন্য পরিবেশ অধিদফতরে লিখিতভাবে জানানো হবে’।

চন্দনাইশ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, সাংবাদিক আইয়ুব মিয়াজীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আইয়ুব মিয়াজীর ওপর হামলার প্রতিবাদে দোহাজারী পৌর সদরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। সমাবেশে সাংবাদিকরা বলেন, একজন গণমাধ্যমকর্মীকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মারধর করে তৃতীয় তলা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার তথ্যপ্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।  

চন্দনাইশ প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুইদিন পার হয়ে গেলেও জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই’।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৩
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।