চট্টগ্রাম: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নগরের চান্দগাঁও থানার শহিদুল ইসলাম শহিদ হত্যা মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
গত ২৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফয়সাল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এটি গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আওতাধীন থানাগুলোতে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে প্রথম অভিযোগপত্র।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরের বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে নিউমার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালান। এরপর বহদ্দারহাট মোড়সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। পরে তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
শহিদ হত্যা মামলায় ২৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ। তিনি বলেন, মামলাটি তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোর্ট শাখার জিআরও মো. আনিস বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে খুনের মামলাগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম দাখিল করা অভিযোগপত্র। গত ৩০ জুলাই আদালতে জমা দেওয়া হলে বাদীকে হাজির হতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন পাবলিক, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন ডাক্তার রয়েছেন। এসআই মো. ফয়সাল তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করেন।
এমআই/টিসি