চট্টগ্রাম: শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চিটাগাং চেম্বারের মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের অনুচ্ছেদ ১৯ অনুযায়ী সদস্যপদ নবায়নের সময় ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ব্যবসায়ী ফোরাম। ফোরামের নেতারা চেম্বারের সব সদস্যকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবের জরুরি হস্তক্ষেপও কামনা করেন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক আনোয়ার পাশার অপসারণের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।
বিজিএপিএমইএর পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে অংশ নেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মো. মশিউল আলম স্বপন ও মো. দিদারুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ পাদুকা শিল্প মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মো. এরশাদুল হক কোরেশী, বাংলাদেশ ব্রিকফিল্ড অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের দ্বিতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাল উদ্দিন বাবলু, আইন সম্পাদক এসএম ফরিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য মো. শাহনেওয়াজ রুমি, মো. মেজবাহ উদ্দিন, মো. সরোয়ার আলম, জেসি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. সালাউদ্দিন, নারী উদ্যোক্তা জেসমিন খানম, বাস কাউন্টার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জানে আলম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ঐতিহাসিক জুলাই ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর বৈষম্যবিরোধী ব্যবসায়ী ফোরামের তীব্র আন্দোলনের মুখে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তৎকালীন বোর্ড অব ডাইরেক্টরস পদত্যাগে বাধ্য হলে সরকার কর্তৃক চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও প্রশাসক যথাসময়ে নির্বাচন আয়োজন করতে ব্যর্থ হন। তদুপরি, চেম্বারের মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন উপেক্ষা করে ৩০ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ০১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সদস্যপদ নবায়নের সময় নির্ধারণ করে প্রশাসক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন, যা বিধি বহির্ভূত, সদস্যদের অধিকার পরিপন্থী, পক্ষপাতমূলক, অস্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নীতির পরিপন্থী।
তারা বলেন, অন্যান্য বাণিজ্য সংগঠনের প্রশাসকরা যথাসময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করলেও চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাণিজ্য সংগঠনসমূহের সদস্য অন্তর্ভুক্তি ফি ও সদস্যপদ নবায়ন ফি বহুগুণ বৃদ্ধি করা হলেও তা কমানোর ব্যাপারে প্রশাসক কোনো পদক্ষেপ নেননি। ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত চেম্বারের সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি। কিন্তু চেম্বারের মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের বিধানকে পাশ কাটিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ০১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সদস্যপদ নবায়নের সুযোগ রেখে তড়িঘরি করে ১১ আগস্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় সময়সল্পতা ও যথাযথ প্রচারের অভাবে মাত্র ৬ হাজার ৭৬৫ জন সদস্য তাদের সদস্যপদ নবায়ন সম্পন্ন করতে সক্ষম হন, যা মোট সদস্যের ৫০ শতাংশেরও কম।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের চেম্বারের কার্যক্রম ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে নানা কৌশলে দূরে রাখা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসকের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অতীতে সুবিধাভোগী
কোনো মহলের প্রভাবের ধারাবাহিকতা বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
বৈষম্য বিরোধী ব্যবসায়ী ফোরামের নেতারা পক্ষপাতদুষ্ট, অযোগ্য, ফ্যাসিবাদের দোসর প্রশাসককে অপসারণ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান।
এআর/পিডি/টিসি