ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আসলামসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৫
আসলামসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আটক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: নগরীর কাজির দেউড়ি ও নুর আহম্মদ সড়ক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আটক করেছে পুলিশ।

এরমধ্যে নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের পাশ্ববর্তী ইয়াসমিন প্যালেসে অভিযান চালিয়ে ২৪৩জন আটক করা হয়।

সেখানে আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হককেও আটক করে পুলিশ। বাকিদের নগরীর কাজির দেউড়ি, লাভলেনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করে।


রোববার শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়ে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে নাসিমন ভবনের সামনে সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। এরআগেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কালো পতাকা হাতে নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শ্রমিক কল্যাণ পার্টির ব্যানারে জামায়াত-শিবিরের একটি বড় মিছিল যোগ দেয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিবির কর্মীদের হাতে গাছেল লাঠি দেখা গেছে। এছাড়া বস্তায় করেও লাঠি নিয়ে আসে তারা।

এরপর পৌনে তিনটার দিকে কাজির দেউড়ি এলাকা থেকে বিশাল একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয় জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। এসময় শিবির কর্মীদের হাতে লাঠি ও লোহার রড দেখা গেছে।

সমাবেশে নগর শিবিরের সভাপতি নুরুল আমীন সমাবেশে বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে দমন করার জন্য ছাত্র শিবিরই যথেষ্ট।

বিকেল পৌনে চারটার দিকে সমাবেশ স্থলের উত্তর পাশ থেকে কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী কালো কাপড়ে গণতন্ত্র লেখা কফিন নিয়ে মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর কাজির দেউড়ি চত্ত্বরে গিয়ে সমাবেশের চেষ্টা করে। এসময় সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়। পরে কয়েকজন কর্মী দুই মিনিট অবস্থান করবে জানিয়ে সময় চাইলে সুযোগ দেয় পুলিশ।

গোল চত্ত্বরের আশপাশে আগে থেকেই বেশ কিছু শিবির কর্মী অবস্থান করছিল। কফিন নিয়ে গোল চত্ত্বরে উঠার পরই পুলিশদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে শিবির ও ছাত্রদল কর্মীরা। পুলিশ তাদের বেশ কয়েকবার সতর্ক করলেও মানেনি তারা। এরপর পুলিশ পাল্টা আক্রমণ শুরু করলে সংঘর্ষ বাধে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। বেশ কয়েকবার পুলিশ ও শিবির-ছাত্রদল কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এদিকে কাজির দেউড়িতে সংঘর্ষে শুরু হলেও নাসিমন ভবনের সামনে সমাবেশ চলছিল। পরে সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় একটি মিনি ট্রাকে আগুন দেয় উত্তেজিত কর্মীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সমাবেশ পণ্ড করে দেয় পুলিশ। বিকেল চারটার দিকে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে সমাবেশ পণ্ড করে দেয়। পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-শিবির কর্মীদের কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় বিএনপি নেতারা কিছুক্ষণ মঞ্চে অবস্থান করলেও পরে পালিয়ে যায়।

পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আসলাম চৌধুরীসহ প্রায় ৩০০ নেতা-কর্মী মঞ্চের পেছনে ইয়াসমিন প্যালেসে ঢুকে পড়ে। গ্রেফতার এড়াতে ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। কয়েকজন কর্মী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ২৪৩জনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া গ্রেফতার এড়াতে ওই ভবনের ছাদ থেকে লাফ দেয় এক কর্মী।

বিকেল পাঁচটার দিকে কাজির দেউড়ি ও নুর আহম্মদ সড়ক এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপর ইয়াসমিন প্যালেসে অভিযান শুরু করে পুলিশ। প্রায় আড়াই ঘন্টা অভিযান চালিয়ে ২৪৩জনকে আটক করে।

এদিকে নগরীর কাজির দেউড়ি থেকে একটি অবিষ্ফোরিত ককটেল ও সমাবেশ স্থলের কাছ থেকে ১৫টি পেট্রল বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সমাবেশ চলাকালে দায়িত্বরত পুলিশদের উপর হামলা চালায়। তিনজন পুলিশসহ ২৫ আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা আক্রমণ করে।

তবে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।

কোতোয়ালী থানার ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকে জানান, সংঘর্ষের পর বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ‘ইয়াসমিন প্যালেস’ নামে ওই ভবনে আশ্রয় নেয়। সেখানে অভিযান চালিয়ে আসলাম চৌধুরীসহ ২৪৩জনকে আটক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৪

** চট্টগ্রামে সংঘর্ষে আহত ২০, আটক ৫০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।